মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের মুখে গণহত্যা থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে।
এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। খবর বিবিসির।
গত ২৫ আগস্ট ভোররাত থেকে রাখাইনে সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘাত শুরু হয়।
এতে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। এর মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও বাকিরা আনসার সদস্য।
এ ঘটনার পর মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী বিতাড়ন অভিযান শুরু করে। তারা রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে হানা দিয়ে সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করছে এবং ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে।
অভিযানকালে গত ১১ দিনে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ নিরস্ত্র রোহিঙ্গা।
এদিকে অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে, ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলেছে, রোহিঙ্গাঅধ্যুষিত গ্রামগুলো জ্বালিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।
স্যাটেলাইট থেকে সংগৃহীত ছবির সূত্রে এইচআরডব্লিউ ১৭টি পৃথক স্থান চিহ্নিত করেছে, যেখানে কোথাও কোথাও পুরো গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
শুধু রাখাইন রাজ্যের মুসলিমঅধ্যুষিত রাতিডং এলাকাতেই ৭০০ বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
এদিকে রাখাইন প্রদেশে সহিংসতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দেশটির কিছু সাধারণ মানুষও গণহত্যায় অংশ নিচ্ছে।
নৃশংসতার প্রমাণ লুকাতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মরদেহ সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এদিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান চলবে বলে আভাস দিয়েছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং।
You cannot copy content of this page