• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২১ অপরাহ্ন

জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশকে কৃতজ্ঞতা,সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারকে তাগিদ

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে সেনা অভিযানের মুখে গণহত্যা থেকে রেহাই পেতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস।

এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। এ জন্য অবিলম্বে রাখাইনে সহিংসতা বন্ধ করতেও বলেন তিনি।

মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

তিনি বলেন, অসহ্য যন্ত্রণা ও হতাশার শিকার প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন এবং বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

শরণার্থীদের প্রবেশের সুযোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জাতিসংঘ মহাসচিব। তিনি এ সিদ্ধান্তকে উৎসাহব্যঞ্জক বলে অভিহিত করেন।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আগামী তিন মাসে এক লাখ ৮০ হাজার ডলার সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ সংস্থাগুলো।

গত ২৫ আগস্ট ভোররাতে রাখাইনে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী পুলিশের সঙ্গে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যদের সংঘর্ষ হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের অভিযুক্ত করে এ ঘটনার নিন্দা জানান।

তবে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে জাতিসংঘের কাছে ক্রমাগত কেবল মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সহিংসতা আর নির্বিচারে হামলার খবর আসছে। ফলে চরমপন্থা আরও বাড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি জানান তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চলা অবিচার এবং অমীমাংসিত দুর্দশার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে জমাটবদ্ধ হয়ে পঁচে গেছে, যা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার এমন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যাকে কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।

গুতেরেস রাখাইন রোহিঙ্গা মুসলমানদের বহু বছরের পুরনো বৈষম্য, হতাশা এবং চরম দারিদ্র্যের কথা উল্লেখ করে তাদের জাতিগত নিধনের শিকারে পরিণত হওয়ার আশঙ্কার বিষয়ে সতর্ক করেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, সংকটের আসল কারণ খুঁজে বের করে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার ক্ষেত্রে আর কালক্ষেপণের সুযোগ নেই। তাই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে এখনই রোহিঙ্গা মুসলমানদের নাগরিকত্ব প্রদান অথবা এমন বৈধতা দিতে হবে, যাতে তারা স্বাধীনভাবে বাঁচতে ও চলাফেরা করতে পারে, কাজ খুঁজে পায় এবং শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

এ ছাড়া চক্রাকারের সহিংসতা বন্ধে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নিতে এবং সবাইকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সহায়তা দিতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সামগ্রিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও উদ্যোগী হয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এক্ষেত্রে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে চিঠি পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন তিনি।এতে চলমান সহিংসতার অবসান এবং সংকটের মূল কারণগুলো সমাধানের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে অভিযান শুরু করে সেখানে অগ্নিসংযোগ ও নির্বিচারে গুলিবষর্ণ করে আসছে। চলমান এ সহিংসতায় এ পর্যন্ত অন্তত চারশ জন নিহত হয়েছেন।

এ অবস্থায় প্রাণ বাঁচাতে গত ১১ দিনে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page