• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

নির্ধারিত সময়ে বোনাস দেয়নি দুই তৃতীয়াংশ গার্মেন্টস

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

টাইনাস নামে মিরপুরের একটি গার্মেন্টস কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা চলছিল। কারখানাটি শ্রমিক ও কর্মীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কারখানার মালিককে নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালায়। গতকাল এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল। শুধু ওই কারখানা নয়, বেতন-বোনাস ইস্যুতে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা, গাজীপুর, আশুলিয়া ছাড়াও সাভারের অন্যান্য এলাকা, নারায়ণগঞ্জ, এবং চট্টগ্রামের বেশ কিছু কারখানায় ছোট-বড় সমস্যা রয়েছে। কিছু সমস্যা সমাধান হলেও যুক্ত হচ্ছে নতুন কারখানা।
ঈদুল আজহা’র আগে ২৪ আগস্টের মধ্যে (গত বৃহস্পতিবার) গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দিতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও দুই তৃতীয়াংশ গার্মেন্টস কারখানাই বোনাসের অর্থ পরিশোধ করেনি। শিল্পাঞ্চল পুলিশের মহাপরিচালক নওশের আলী ইত্তেফাককে বলেন, এখন পর্যন্ত এক তৃতীয়াংশ কারখানা ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে। গত ১৬ আগস্ট স্বরাষ্ট্র শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মালিক ও শ্রমিক নেতাদের এক বৈঠকে ২৪ আগস্টের মধ্যে গর্মেন্টস শ্রমিকদের বোনাসের অর্থ পরিশোধের পাশাপাশি ঈদের আগে চলতি মাসের বেতনের ৭৫ শতাংশ পরিশোধের জন্য অনুরোধ করা হয় মালিকপক্ষকে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, বাস্তবে এক তৃতীয়াংশ কারখানায়ও এখনো বোনাসের অর্থ পরিশোধ করা হয়নি।
শিল্পাঞ্চল পুলিশের আওতাধীন গার্মেন্টস কারখানার সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এর বাইরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে আরো প্রায় ৯শ’ গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে বলে জানা গেছে। শিল্পাঞ্চল পুলিশের মহাপরিচালক আশা করছেন, ঈদের আগে বেতন-বোনাস সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বেতন বোনাস নিয়ে সমস্যা হতে পারে – এমন কারখানা তালিকা করে থাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এবং শিল্পাঞ্চল পুলিশ। বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি এস এম মান্নান কচি ইত্তেফাককে বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী ৮শ’ কারখানাকে আমরা নজরদারিতে রেখেছি। এর মধ্যে বেশিরভাগেরই ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করতে পারব। তবে শেষ পর্যন্ত অন্তত ১০টি কারখানাকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। এখন ওই সমস্যার সমাধানের জন্য কাজ করছি। তবে তিনি বলেন, দুই তিন দিনের মধ্যেই বোনাসের অর্থ পরিশোধ হয়ে যাবে। আর শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চলতি মাসের বেতনের ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ ঈদের আগে পরিশোধ করা হবে। অবশ্য বাস্তবতা ভিন্ন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। রাজধানীতে গতকালও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে শ্রমিক অধিকার সংগঠনগুলো।
জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরের মেরিডিয়ান গার্মেন্টসের সমস্যা গতকাল পর্যন্ত সমাধান হয়নি। ঈদের আগে কারখানাটির শ্রমিকরা বোনাসের অর্থ পাচ্ছেন না। বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যা হওয়ার পর কারখানার মালিক দেশ ছেড়েছেন বলে বিজিএমইএ’র নেতারা জানিয়েছেন। আপাতত শ্রমিকদের এক মাস ১০ দিনের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। সমস্যা রয়েছে তুংহাই নিটিং এন্ড ডায়িংয়ে। টঙ্গির কেপরি গার্মেন্টস নামে একটি কারখানা গত কয়েকদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মালিবাগের মেগাস্টার কারখানার শ্রমিকরাও বোনাসের অর্থ পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার জানিয়েছেন, বেতন-বোনাস নিয়ে সমস্যায় রয়েছে বেশকিছু কারখানা। এ তালিকায় রয়েছে রাজধানীর মালিবাগের ড্রাগন সোয়েটার, গাজীপুরের বড়বাড়ি এলাকার লাক্সমা সোয়েটার, দক্ষিণখান এলাকার সোয়ান গার্মেন্টস ও সোয়ান জিন্স (বর্তমানে বন্ধ)। এর বাইরে নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম এলাকায় অপেক্ষাকৃত ছোট কারখানায় কম-বেশি সমস্যা চলছে। তিনি জানান, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র সদস্য বহির্ভূত কারখানায়ই মূলত বেতন-বোনাসের ঝামেলা বেশি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। সমাবেশে ঈদের আগে শ্রমিকদের চলতি আগস্ট মাসের বেতন ও বোনাসের অর্থ পরিশোধ করার দাবি তোলা হয়েছে।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page