• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন মিয়ানমারের পাশে ভারত?

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

গত মাস থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার থেকে মিয়ানমার সফর করছেন।

তার সফরের সময় যত এগিয়েছে, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী কথাবার্তাও শোনা গেছে।

২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের বেশ কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়িতে সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারত সবসময় মিয়ানমারের পাশে থাকবে।

এর আগে ভারতের বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজুজু ঘোষণা দেন, ভারতে বসবাসরত ৪০হাজার রোহিঙ্গার সবাইকে বহিষ্কার করা হবে।

ভারতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৬ হাজার রয়েছে জাতিসংঘ নিবন্ধিত শরণার্থী।

এ সত্ত্বেও রিজুজু বলেন, জাতিসংঘের নিবন্ধনের কোনো অর্থ নেই। আমাদের কাছে ওরা সবাই অবৈধ।

এ ব্যাপারে কলকাতায় বিবিসির সাবেক সাংবাদিক বর্তমানে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে থাকা সুবীর ভৌমিক বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরের ঠিক আগে দিল্লির পক্ষ থেকে এসব বক্তব্য বিবৃতির মূল্য উদ্দেশ্য বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারের সঙ্গে অধিকতর ঘনিষ্ঠতা। সংখ্যাগরিষ্ঠ বার্মিজদের রোহিঙ্গা বিরোধী কট্টর মনোভাবের সঙ্গে একাত্ম হতে চাইছে ভারত।

ভৌমিক বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে চীনের মৌনতার সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছে মোদি সরকার।

ভারতের মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মিয়ানমার স্টাডি সেন্টারের অধ্যাপক জিতেন নংথাওবামকে উদ্ধৃত করে সাংবাদিক সুবীর ভৌমিক বলেন, মুসলিমদের প্রশ্নে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী এবং কট্টর বৌদ্ধরা মোদি এবং তার দল বিজেপির সঙ্গে একাত্ম বোধ করে।

ভারত যে সম্প্রতি বিশেষ অভিযানের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা বলেছে, সেটাকেও দেখা হচ্ছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের প্রতি দিল্লির সমর্থন হিসেবে।

সাংবাদিক ভৌমিক বলেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরিতে উন্মুখ। কারণ, ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে বিদ্রোহী তৎপরতায় লিপ্ত যোদ্ধাদের অনেকেই মিয়ানমারের জঙ্গলে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ফলে তাদের শায়েস্তা করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ভারতের প্রয়োজন।

মিয়ানমারে ভারত এখন কিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। রাখাইন রাজ্যেই ভারত একটি বন্দর এবং নদীপথ প্রকল্পে জড়িত। ভারতের মিজোরাম এবং রাখাইন রাজ্যের মধ্যে একটি সড়ক নির্মাণেও ভারত জড়িত।

সুবীর ভৌমিকের ভাষ্য, ভারতের মূল উদ্দেশ্য মিয়ানমারে চীনের প্রভাব বলয়ে ফাটল ধরানো।

মিয়ানমার সফরে নরেন্দ্র মোদি বাগান এলাকায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি প্যাগোডা দেখতে যাবেন। এই প্যাগোডাটি ভারত সংস্কার করে দিচ্ছে। স্থানীয় স্টেডিয়ামে মোদি একটি জনসভাতেও ভাষণ দেবেন।

ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ভাবাবেগ ব্যবহার করে বার্মিজ জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টাই তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page