• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন

থামছেনা মিয়ানমার বাহিনীর বাড়াবাড়ি ৪০ দেশের প্রতিনিধি দলের ক্যাম্প পরিদর্শনকালে পুড়িয়েছে রোহিঙ্গাদের ৭০-৮০টি ঘর-বাড়ি

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মিয়ানমার সেনা-পুলিশ ও মগ দস্যুদের বাড়াবাড়ি সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কিছুতেই থামছেনা তাদের বাড়াবাড়ি। গতকাল বুধবারেও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে তুমব্রু সীমান্তের কয়েক শত গজের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ৭০-৮০টি ঘর-বাড়ি। বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত বাংলাদেশের এপার থেকে আগুন জ্বলার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করলেন শত শত মানুষ।

বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দিয়ে, গুলি করে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-শিশু-পুরুষকে হত্যা করে নিজেদের জিঘাংসা মেটাচ্ছে মিয়ানমারের সেনা-পুলিশ ও মগদস্যু জানোয়ারের দল। তাদের নিষ্ঠুর নির্যাতনে শিকার লাখ লাখ রোহিঙ্গা নারী-শিশু পুরুষ আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। সারা বিশ্ব আজ তাদের এই গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও সেই মগের মুল্লুক এর মগ বাহিনী থামছে না যেন কিছুতেই।

দুপুরে বিশ্বের ৪০টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা যখন এসব নির্যাতিত মানুষগুলোকে দেখতে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিদর্শন করছিলেন তখন মিয়ানমারের ওই হায়েনার দল বাংলাদেশ সীমান্তের খুব কাছের ওপারে আরাকানের খলিফা পাড়া গ্রামের ঘর-বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুপুরে ৮/১০ টি বাড়িতে আগুন দেয়া হলেও সন্ধ্যার দিকে ওই এলাকার সৈয়দ করিম রোয়াজিগ্গিরীর ৭০/৮০টি বাড়িতে একসাথে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকা রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়ি-ঘর গুলো জ্বালিয়ে দেয়ার এই দৃশ্য এপারের শত শত মানুষের সাথে ৪০ দেশের প্রতিনিধিরাও প্রত্যক্ষ করেছেন। ওই সময় তারা তুমব্রু ও ঘুমঘুম সীমান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করছিলেন।

তুমব্রু সীমান্ত পয়েন্ট থেকে মাত্র কয়েক শত গজের দূরত্বের এই ঘটনা (রাত ৯টায় এই লেখার সময়ও) দেখেছেন শত শত মানুষ। গত রাতে প্রত্যক্ষদর্শী তুমব্রু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ ও প্রাইমারী শিক্ষক হামিদুল হক এই প্রতিবেদককে জানান এই দৃশ্য খুবই মর্মান্তিক। সীমান্তের ওপারে তাদের চোখের সামনেই মাত্র কয়েক শত গজের মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাড়ি-ঘর গুলো এভাবে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়ার দৃশ্য অসহ্য এবং বড় করুন। তাদের মতে মিয়ানমার বাহিনীর এই ভাবে ধৃষ্টতা দেখানো বাড়াবাড়ি এবং বাংলাদেশের প্রতি একধরণের চ্যালেঞ্জ। রাতে আরো কোন ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন। তারা বিষয়টি কক্সবাজার জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছে বলেও জানান।

এদিকে আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলিম নির্যাতন ও মিয়ানমার সরকারী বাহিনীর গণ হত্যার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভাষণে রোহিঙ্গাদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মিয়ানমার সরকারে নির্যাতন ও গণহত্যা নিন্দা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সীমান্তে কোন ধরণের অন্যায় আচরণ বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে নির্যাতন বন্ধের আহবান জানানোর একদিন পরে এভাবে সীমান্তের খুবই কাছের (মাত্র কয়েক শত গজের মধ্যে) বাড়ি-ঘরে আগুন জ্বালানোর বিষয়টি মিয়ানমার বাহিনীর স্পষ্ট বাড়াবাড়ি এবং ধৃষ্টতা বলেই মনে করছেন সচেতন মহল।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page