ফর্মে থাকা হার্দিক পান্ডিয়ার সামনে বিশ্বের যেকোনো বোলিং আক্রমণই যে ফিকে হয়ে যায় সেটা প্রমাণিত হলো আরেকবার। রবিবার ডানহাতি এই অলরাউন্ডার ৮৩ রান করলেন মোটে ৬৬ বল খেলে। আর তাতে চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর ভারত স্কোরবোর্ডে তোলে সাত উইকেটে ২৮১ রান।
আর বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ডাকওয়ার্থ লুইস মেথডে ২১ ওভারে ১৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মোটে ১৩৭ রান করতে পারে। হেরে যায় ২৬ রানের ব্যবধানে। এখানেও বড় অবদান আছে পান্ডিয়ার চার ওভার বল করে ২৮ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন দুই উইকেট। আর এই অলরাউন্ড কৃতিত্বের সুবাদে ২৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
পান্ডিয়ার এই ইনিংসটা খুবই ‘স্পেশাল’। কারণ, চলতি বছরে এই নিয়ে চতুর্থবারের মত এক ইনিংসে টানা তিনটি বলে ছক্কা হাঁকালেন তিনি। এর প্রথম দুটি নজির পাকিস্তানের বিপক্ষে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে। সেবার টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইমাদ ওয়াসিমের টানা তিন বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ছিলেন তিনি। ফাইনালে সেই পাকিস্তানের কাছে হারলেও, লেগ স্পিনার শাদাব খানের বিপক্ষে টানা তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে ছিলেন তিনি।
এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পালেকেল্লে টেস্টে পান্ডিয়ার বিপক্ষে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয় মালিন্দা পুষ্পকুমারাকে। এরপর গত রবিবার পান্ডিয়ার সেই একই আগুনে পুড়লেন অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। পান্ডিয়া চলতি বছর তার ১৭টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে পেয়েছেন ৩২টি ছক্কা। বলাইবাহুল্য, এটা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
বছরে দ্বিতীয়বারের মত দুই বা তার বেশি সংখ্যক উইকেটের সাথে হাফ সেঞ্চুরি পেলেন এই অলরাউন্ডার। সর্বশেষ জানুয়ারিতে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ রান দিয়ে তিন উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৫৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
শুধু তাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাত্র তৃতীয় ভারতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে দুই উইকেট আর হাফ সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়লেন তিনি। সর্বপ্রথম ১৯৯৮ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকার ১৪১ রানের সাথে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে নিয়েছিলেন চারটি উইকেট। এরপর ১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ডের দ্য ওভালে ৭৫ রানের ইনিংস খেলার সাথে ৪৩ রান দিয়ে দুই উইকেট পেয়েছিলেন রবিন সিং।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই জয়ের পর পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে। এই সিরিজ শেষে আগামী ৭, ১০ ও ১৩ অক্টোবর নিজেদের মধ্যে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দুই দল।