• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন

মধ্যবিত্ত থেকে কৃষক বাড়ি নির্মাণে ঋণ পাবে সবাই এইচবিএফসির এমডি

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

শুধু মধ্যবিত্তই নয়, নিন্মমধ্যবিত্ত এমনকি কৃষকরাও ঋণ পাবে বাড়ি নির্মাণের জন্য। পল্লী এলাকায় কৃষকরা সাড়ে ৮ শতাংশ সুদে ঋণ পাবে। এ সুদ হার আগামীতে আরও কমবে। বর্তমানে সরল সুদে ও গোপনীয় চার্জ (হিডেন) আরোপ ছাড়াই ঋণ দেয়া হচ্ছে। ঋণের এ আবেদন ঘরে বসেই করা যাবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের দেয়া হচ্ছে বিশেষ সুবিধার প্যাকেজ।

যুগান্তরের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (এইচবিএফসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেবাশীষ চক্রবর্তী।

দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, এইচবিএফসির লক্ষ্য হচ্ছে মধ্য ও নিন্মমধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বাইরে ঋণ দিচ্ছে না। পল্লী এলাকায় ঋণ দেয়ার লক্ষ্যও রয়েছে আমাদের। এইচবিএফসির গত পাঁচ বছরে ঋণ দেয়ার প্রবণতা গ্রামীণ এলাকায় বেশি। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট ঋণের ৬৩ শতাংশ পল্লী এলাকায় বিতরণ করা হয়।

তিনি বলেন, হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের আইনে ঋণের ওপর সরল সুদ আরোপের কথা বলা আছে। এতে সুদের ওপর কখনই সুদ আরোপ করা হয় না। ফলে চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আরোপের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণের ওপর চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আরোপ করছে। এর অর্থ সুদের ওপর সুদ আরোপ করা। সুদকে মূলধনে রূপান্তর করা হয়।

পাশাপাশি অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ যদি খেলাপি হয় সে ক্ষেত্রে লাফিয়ে লাফিয়ে সুদ ও আসল বাড়তে থাকে। কারণ চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বেড়ে তা মূলধনে রূপান্তর হয়। আমি মনে করি ঋণ গ্রহীতার একটি আস্থার স্থান এইচবিএফসি। কারণ এখানে ঋণ ইস্যুর ক্ষেত্রে কোনো হিডেন (গোপনীয়) চার্জ আরোপ করা হয় না। ঋণ প্রসেসিং ফি নেই। আবেদনসহ আনুষাঙ্গিক ফি এখানে অনেক কম।

আমাদের ঋণের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একজন গ্রাহক ২০ বছর মেয়াদে ঋণ নেয়ার পর নির্ধারিত মেয়াদের আগে পরিশোধ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে অগ্রিম নিষ্পত্তি (আর্লি স্টেটেলম্যান্ট) নামক একটি ফি নেয়া হয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু এইচবিএফসিতে তা নেয়া হয় না। এ ছাড়া অনেক গ্রাহক নির্দিষ্ট কিস্তির চেয়ে বেশি টাকা পরিশোধ করতে চায়।

এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দেয়া অর্থ মূল ঋণ থেকে সমন্বয় করা হবে। অন্য ব্যাংকগুলো এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কিস্তির অর্থ সাসপেন্ড অ্যাকাউন্টে রেখে দেয়। যদি সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের কিস্তি বকেয়া পড়ে তখন ওই অ্যাকাউন্ট থেকে তা পরিশোধ করা হয়।

তিনি বলেন, সুদের হার তুলনামূলক এইচবিএফসিতে কম। পল্লী এলাকার ঋণের সুদ সাড়ে ৮ শতাংশ আছে। আগামীতে এটি আরও কমিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। শহরে সাড়ে ৯ শতাংশ। ফ্লাট ঋণ দেয়া হচ্ছে ১০ শতাংশ হারে। দেবাশীষ চক্রবর্তীর মতে সচেতন হলে এইচবিএফসিতে এসে হয়রানি হতে হবে না।

অনেকে জমির মালিক হলেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে না। কাগজপত্র ঠিক থাকে না। কিন্তু ঋণের জন্য আবেদন করছেন। দেখা যায় জমির খতিয়ান, খাজনা আপডেট নেই। তখন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা দফতরে গিয়ে তা ঠিক করে আনার পরামর্শ দেয়া হয়। আমরা এইচবিএফসির ফেসবুক পেজ খুলেছি। সেখানে যে কেউ অভিযোগ দিতে পারবে।

আমি নিজেই ওই অভিযোগ মনিটরিং করছি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফেসবুকে অনেকে বলে আপনার (এমডি) এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। আমি বলি প্লিজ আপনার বাস্তব কোনো অভিজ্ঞতা কিংবা আপনার আত্মীয়স্বজন কেউ ঘুষ দিয়ে থাকলে বলুন, ব্যবস্থা নিতে দিন আমাকে। কিন্তু এই যে বদ্ধমূল একটা ধারণা সরকারি প্রতিষ্ঠান মানে ঘুষ দিতে হয়। এটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছি।

আমার মতে এইচবিএফসির ফেসবুক পেজ খুবই শক্তিশালী। মিনিটে মিনিটে অসংখ্য গ্রাহক প্রশ্ন করছে। এর জবাব তাৎক্ষণিক দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া হয়রানিমুক্ত রাখতে অনলাইনে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রবাসীদের বিশেষ সুবিধায় পৃথক ঋণ প্যাকেজ রয়েছে। আগে শুধু পাঁচটি দেশের প্রবাসীরা ঋণ পাওয়ার যোগ্য ছিল। এখন সবার জন্য তা উন্মুক্ত।

তিন বছর বিদেশে অবস্থান করলে, বৈধ কাগজপত্র ও আয় থাকলে ঋণ পাবে। এ জন্য কোনো প্রবাসীকে দেশে আসতে হবে না। দেশের ভেতর একজনকে নমিনি করে দিলে হবে। দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, সেবার মান উন্নত করা আমার প্রথম লক্ষ্য। ডিজিটালাইজেশনের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে এইচবিএফসি। তা দ্রুত মোকাবেলার চেষ্টা চলছে।

পাশাপাশি সাড়ে ১২ লাখ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর হাউস ঋণ দেয়ার ব্যাপারেও চিন্তা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page