• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

সাতক্ষীরায় বাড়িতে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাটের অভিযোগ আদালতে মামলা

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি॥
এক কৃষক জেলে থাকার সুযোগে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তার স্ত্রী ও দু’সন্তানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫০ হাজার টাকা, দু’লক্ষাধিক টাকার সোনার গহনা ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র লুটপাটের অভিযোগে দু’সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদি হয়ে সোমবার সাতক্ষীরার বিচারক হাকিম-২য় আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক রাজীব রায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তালা উপজেলা চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, বিক্রির পরও নানী বিবিজান বিবির নামে রহিমাবাদ মৌজার এক একর ছয় শতক রেকর্ড থাকায় নাতনি ফতেমা ওই জমি পাওয়ার জন্য মামা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মোবারকপুরের আব্দুল হাকিমের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছিল। এ নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পাটকেলঘাটা সহকারি পুলিশ সুপারের কাছে মা রাবেয়াকে দিয়ে অভিযোগ করায় ফতেমা। তাতেও সুবিধা করতে না পেরে মামা জেলে থাকাকালিন তালা উপজেলার নলতা গ্রামের বাবর আলী মোড়লের ছেলে নব্য সাংবাদিক শফি মোড়ল ও রহিমাবাদ গ্রামের হানেফ সরদারের ছেলে সাংবাদিক এমএ ফয়সাল সরদার ওরফে ডাকাত ফয়সালের সহযোগিতায় সন্ত্রাসীদের নিয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে মামার জমি থেকে কয়েকটি মেহগনি গাছ কেটে লুটপাট করা হয়। উপজেলা চেয়ার ম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের কাছে খবর পেয়ে কাটা গাছের কিছু অংশ উপপরিদর্শক মদন পাল যেয়ে রহিমাবাদ মসজিদের সামনে থেকে জব্দ করেন।
ঘটনায় আরো জানা যায়, ১২ সেপ্টেম্বর সকালে আব্দুল হাকিম জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন জানতে পেরে ১১ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত দু’ টোর দিকে সাংবাদিক শফি মোড়ল, সাংবাদিক ফয়সাল সরদার, আসমত গাজী, সাগর গাজী, শহীদ সরদার ও ফতেমাসহ সাতজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আব্দুল হাকিমের বাড়িতে হামলা চালায়। জামরুল গাছ বেয়ে ঘরের ছাদ থেকে নীচে নেমে আগে থেকে ওঁৎপেতে থাকা পাঁচজন সন্ত্রাসী গৃহকত্রী দরজা খুলে সিঁড়ির নীচে বাথরুমে আসার জন্য দরজা খুললেই তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুখের মধ্যে কাপড় ঢুকিয়ে দিয়ে ঘরের মধ্যে নিয়ে ক্লবসিগ্যাল গেটের চাবি খোলে। এ সময় বাইরে থাকা দু’ আসামী ঘরের মধ্যে চলে আসে। ডাকাত দলের সকল সদস্যরা আব্দুল হাকিমের ১০ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্র  ঘুমন্ত নাঈম ও মেয়ে হেনা সুলতানাকে বেঁধে ফেলে একে একে শোকেচে রাখা গরু ও বাছুর বিক্রির নগদ ৫০ হাজার টাকা ও ১ লাখ ৬৮ হাজার সোনার গহনাসহ বাড়িতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র লুটপাট করে। চলে যাওয়ার আগে তারা হেনা ও নাঈমকে একটি ঘরের মধ্যে মুখ ও হাত বাঁধে ঘরের ছিকল তুলে দিয়ে দড়ি দিয়ে তার মা জাহানারার হাত ও মুখ বেঁেধ চুল দিয়ে ক্লবসিগ্যাল গেটের সঙ্গে বেঁধে রেখে চলে যায়। ফজরের নামাজ শেষে নামাজ পড়তে যাওয়া কয়েকজন জাহানারাকে প্রায় অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। সন্ত্রাসীদের ভয়ে জাহানারা আতঙ্কে প্রসাব ও পায়খানা করে ফেলে। পরে হেনা ও নাঈমকে মুক্ত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দিলেও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা নেননি। এ ঘটনায় তিনি শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। বিচারকের জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বাদি জাহানারা বেগম জানান, মোবারকপুরের দু’টি হিন্দু বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এমএ ফয়সাল ইতিপূর্বে গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন।
এ দিকে এ জমি নিয়ে রোববার সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত ১৪৫ ধারার একটি পিটিশন মামলা থানায় নিয়ে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমান কড়া সুরে আব্দুল হাকিমকে বলেন যে, তিনি থেকে পুলিশ দিয়ে ওই জমিতে ফতেমার ঘর বেঁধে দেবেন। কারণ আদালতের আদেশে তো কোথাও ঘর বাঁধা নিষেধ এমন কথা বলা নেই।
এ ব্যাপারে  জানতে চাইলে সাংবাদিক ফয়সাল সরদার ও সাংবাদিক শফি মোড়ল জানান, তারা কোন গাছ কাটা বা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নন। এক প্রতিবন্ধি নারীর জমি উদ্ধারের জন্য  তারা সহায়তা করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর রহমানের সঙ্গে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটার সময় সরকারি মোবাইল নম্বরে কথা বলার চেষ্টা করলে তা ব্যস্ত পাওয়া যায়।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page