• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

শহরের পরিচিত ভূগোল ছাড়িয়ে মাদকচক্র এখন ভিন্ন রাজ্যে

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি॥ এ যেন ভূগোল বনাম ইতিহাসের খেলা৷সেই খেলায় ভূগোল ক্রমেই বদলে দিচ্ছে ইতিহাস চর্চার পরিচিত ছককে৷শহরের পরিচিত ভূগোল ছাড়িয়ে মাদক সরবরাহকারীদের ঘাঁটি যে ভাবে শহর,গ্রাম,বিভিন্ন মোড়ের আশেপাশে প্রতিনিয়ত ভিন্ন রাজ্যে বাড়ছে, তাতে চিন্তিত প্রশাসন সচেতন নাগরিক৷বিভিন্ন দূর দূরান্তের নিরাপদ আস্তানায় বসে থাকা মাদক সরবরাহকারীরা নিশ্চিন্তে কাজ চালাচ্ছে৷মাদকচক্রের কারবারের নাড়িনক্ষত্র জানার ছক বদলাতে হচ্ছে প্রশাসনকে৷ সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের ছকের ফাঁদে যে ভাবে একের পর এক মাদকসরবরাহকারী ধরা পড়ছে, তাতে মাদক কারবারের এই পরিবর্তিত ভূগোলের তত্ত্বই উঠে আসছে বারবার৷শহরের বাইরে ধীরেধীরে সক্রিয় হয়ে ওঠা সেই সব মাদক সরবরাহকারীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও তৈরি করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ৷মাদকতদন্ত মূলত সোর্সনির্ভর, তাই নির্ভুলসূত্র পাওয়াই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ তদন্তকারীদের কাছে৷সীমান্তের বিভিন্ন রুট দিয়ে চোরাই পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে গাঁজা,মদ,ইয়াবা,ফেন্সিডিল,হেরোইন সহ বিভিন্ন প্রকারের মাদকদ্রব্যচাঁপাইনবাবগঞ্জে বিভিন্ন পয়েন্টে  মাদকব্যবসা সক্রিয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলির ভূগোল গোয়েন্দাদের পরিচিত৷ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মাদকপাচারকারীদের সঙ্গে,যে ভাবে বাইরের সরবরাহকারীদের ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে তদন্তকারীদের কাছে৷উদ্বেগ বাড়ছে মাদকতদন্তকারীদের৷মূলত দুইটি কারণে৷প্রথমত, সীমিত পরিকাঠামো লোকবলের সাহায্যে সবসময় শহরের বাইরে দূরদূরান্তে সোর্স মোতায়োন করা সম্ভব নয়৷ দ্বিতীয়ত, অধিকাংশক্ষেত্রে মূল সরবরাহকারী পাচারকারীর মধ্যে সাক্ষাত্নাঘটলেও শুধুমাত্র মোবাইলের সাহায্যে নিশ্চিন্তে চলে মাদকপাচার৷বর্তমান সময়ে মাদকের জমজমাট ব্যবসা মোবাইল ফোনে। কয়েকদিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে চাঁপাই নবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ থানার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হাতকাটা অপু, পিতাঃ মান্নান, গ্রামঃ তত্তিপুর উজিরপুর। এই মাদক ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবৎ ভারতীয় নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল ব্যবসা করে আসছে।প্রতিবন্ধীর সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে সে দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে উজিরপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে ফেন্সিডিলের রমরমা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।সে মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছে। উজিরপুর স্পট ঘুরে দেখা যায় বালুর ঘাট এর আশে পাশের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় রমরমা মাদকের ব্যবসা করছে কিছু অসাধু ব্যক্তি।রবু নামের এক মাদক ব্যবসায়ী তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে ফেন্সিডিল সরবরাহ করছে উজিরপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে।রবু হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে হাত কাটা অপুকে।বিক্রেতা মাদকসেবী মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ঠিক করে নিচ্ছে মাদকদ্রব্য কোথায় হ্যান্ডওভার করবেচাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার জনাব টি এম মোজাহিদুল ইসলাম বিপিএম মাদক মুক্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ গড়ার লক্ষে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।শহর শহরের বাইরে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেক পোষ্ট বসিয়ে তল্লাশির মাধ্যমে তাদের গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যুবসমাজ, সামাজিকসাংস্কৃতিক এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করে সমন্বিত কর্মসূচি নিতে পারলে মাদকবিরোধী অভিযান সফল হতে পারেমাদকের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক পদক্ষেপের পাশাপাশি সামাজিকভাবেও আন্দোলন গড়ে তোলার কাজটি শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে পরিবারসমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিশোর তরুণদের মধ্যে মাদক গ্রহণের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে, তা আমাদের রাষ্ট্র, সমাজকে অনিশ্চিত অন্ধকারের দিকেই ঠেলে দেবে। তাই শুধু সরকার,প্রশাসন নয়, সকলকেই যার যার অবস্থান থেকে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page