• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:১২ অপরাহ্ন

কুমিল্লা মেঘনায় ট্রলার চালক আমির হোসেন হত্যা চেয়ারম্যনসহ সৎ ভা্ই আটক

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৭

দাউদকান্দি প্রতিনিধি।।

কুমিল্লা মেঘনা উপজেলার চালিভা্ঙ্গায় ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ডাকাত সৎ ভাইকে হত্যা করে  প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন। মেঘনা থানায় মিথ্যা মামলা করতে ব্যর্থ হয়ে দেলোয়ার হোসেন দেলু ডাকাত, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফসহ কয়েকজন বুধবার কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপারের কাছে প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গেলে কথা বার্তায় গড়মিল হওয়ায় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় ।আজ বৃহস্পতিবার দেলোয়ার হোসেন আটক হয়েছে এ খবর এলাকায় জানাজানি হলে তার ফাঁসির দাবীতে শত শত নারী-পুরুষ চালিভাঙ্গা বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। বিক্ষোভ কারীরা আমির হোসেন হত্যার মূল নায়ক দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ডাকাত ও হত্যার পরিকল্পনাকারীর চেয়ারম্যান আবদুল লতিফের ফাঁসির দাবি জানায়।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের সাথে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসায় প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান  হুমায়ন  সমর্থকদের ফাঁসাতে ট্রলার চালক আমির হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা আটে বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ গং এবং তারই অংশ হিসেবে গত ১৫অক্টোবর হত্যা করা হয়  সহজ সরল ছেলে ট্রলার চালক আমির হোসেনকে।

উল্লেখ্য গত ১৫ অক্টোবর রোববার রাতে দেলোয়ার হোসেনের সৎভাই আমীর হোসেন(42) নিখোজ হওয়ার 40 ঘন্টা পর মঙ্গলবার চালিভাঙ্গা  বাশ বাজার খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় মেঘনা থানা পুলিশ আমীর হোসনের মরদেহ উদ্ধার করে।

নিখোজ হওয়ার রাতে ট্রলার চালক আমির হোসেন ও তার ছেলে ইব্রাহিম(১৫) সারাদিন ট্রলার চালানোর পর রাত সাড়ে ৮টায় বাড়ি ফেরার পথে তার সৎ ভাই মোঃ দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলু ডাকাত মোবাইলে ফোন করে। সে ফোন পেয়ে তার ছেলে ইব্রাহিমকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে সৎ ভাইয়ের কথা মত বৈদ্ধার বাজার যায় দেলু ডাকাতকে আনতে। রাত সাড়ে ১০টায় দেলোয়ার বাচাও বাচাও বলে চিৎকার চেচামেচি করে চালিভাঙ্গা পাগাড়ি বাড়ি হযরত আলীর উঠানে গিয়ে পড়ে। তার কিছুক্ষন পরেই বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ দেলোয়ারকে চিকিৎসার নাম করে স্পিড বোট দিয়ে হাসপাতালের কথা বলে ঢাকায় নিয়ে যায়। লতিফ চেয়ারম্যান এ প্রসঙ্গে বলেন, ওই রাতে অজ্ঞান অবস্থায় দেলোয়ারকে আমি ঢাকা নিয়ে যাই, জ্ঞান ফেরার পর দেলোয়ার আমাকে বলে যে কে বা কারা আমাদের উপর হামলা করে আমির হোসেনকে মেরে নদীতে ফেলে দিয়েছে আর সে নিজে(দেলোয়ার) কোন রকমে প্রানে বেচেছে। আর এই হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় ধুম্রজাল সৃস্টি হওয়ায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য উঠলেও সৎভাই দেলোয়ার হোসেন আটক হওয়ায় সস্তির নিঃশাষ ফেলে এলাকাবাসী। হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী দেলু ডাকাত এর আগে এলাকবাসী অস্ত্রসহ ধরে পুলিশের হাতে দেয়। এছাড়া কয়েকবার পুলিশের হাতে ধরা পরলেও আইনের ফাক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসেছে। তার মদদদাতাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবীও জানিয়েছেন এলাকাবাসী । তার ফাঁসির দাবীতে ফুসে উঠে এলাকার লোকজন ।
আমীর হোসেনের ১৫ বছরের ছেলে ইব্রাহিম বলেন, বাবা এবং আমি ট্রলার নিয়ে বাড়ী আসার সময় আব্বার মোবাইলে একটা ফোন আসে। তখন বাবা আমাকে বলে তুই বাড়ীতে চলে-যা আমি পরে আসব, আর তোর চাচা ফোন করেছে তাকে বৈদ্যার বাজার থেকে নিয়ে আসতে এবং একথা কাউকে জানাতে না করেছে , তুই কাউকে এমনকি তোর মাকেও বলিছ না।
সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, আমীর হোসেন এলাকার নিরীহ ছেলে। দেড় বছর বয়সে মাকে হারানোর পর সৎ মায়ের যন্ত্রনায় তার বাবা অন্যত্র তাকে দত্ত্বক (পালক) দিয়ে দেন। বড় হয়ে বিয়ে করার পর নিজ বাড়ী বাপের বাড়িতে চলে আসেন আমীর হোসেন। এদিকে এই হত্যকান্ডে এলাকার নিরীহ নিরপরাধ লোক যেন হয়রানীর শিকার না হয় এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান এলাকাবাসী।
সহকারী পুলিশ সুপার (হোমনা-মেঘনা ) মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, ট্রলার চালক আমির হোসেন হত্যায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে নিহতের স্ত্রী মেঘনা থানায় মামলা দায়ের করা করেছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ভাই দেলোয়ার, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ ও মানিককে আটক করা হয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page