• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

ভালুকায় অভিন্ন প্রশ্নে ভোকেশনাল সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার অভিযোগ

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৭

দুই শিক্ষককে শোকজ

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি॥
ময়মনসিংহের ভালুকায় গত ০১ নভেম্বর (বুধবার) বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত নবম ভোকেশনাল (বোর্ড ফাইনাল) সমাপনী পরীক্ষার ১ম দিন ভালুকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে (কেন্দ্র কোড-৫৭০৪০) বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা পুরাতন সিলেবাসের ভিন্ন প্রশ্নে কয়েকটি বিদ্যালয়ের কতিপয় পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ সময় পরীক্ষার্থীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। চিন্তিত উদ্ভিগ্ন অভিভাবকগন অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, “আমরা নিয়মিত এবং নতুন সিলেবাসের শিক্ষার্থী কিন্তু আমাদের পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেখানে পুরাতন এবং নতুন বাংলা বইয়ের মধ্যে অনেক গল্প ও কবিতার অমিল রয়েছে। পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ায় আমাদের পরীক্ষা ভাল হয়নি।” শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষন পর বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হলে তারা তাদের কক্ষ পর্যবেক্ষককে বিষয়টি জানান। তখন কক্ষ পর্যবেক্ষকরা বিষয়টি হল সুপার কিংবা হল সচিবকে না জানিয়ে বরং শিক্ষার্থীদের ভোকেশনাল শাখায় পড়াশোনা করার জন্য ব্যঙ্গ বিদ্রোপ করেন এবং পুরাতন প্রশ্নেই নতুনদের পরীক্ষা নেন। পরীক্ষা শেষে একটি বিদ্যালয়ের (হালিমুন্নেছা চৌধুরাণী মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়) ১১জন শিক্ষার্থী যারা নিয়মিত এবং নতুন সিলেবাসের হওয়া সত্ত্বেও পুরাতন সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয়, তারা এ বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানালে ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামাল বরাবর অভিযোগ করেন।
অভিযোগকারীদের মধ্য থেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক জানান, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এই সিলেবাসের প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়ায় প্রশ্ন কমন পড়েনি। তাছাড়া তাদের পরীক্ষার ফলাফল আদৌ আসবে কি না এ বিষয়ে আমরা সন্দিহান। তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হল সচিব আশেক উল্যাহ চৌধুরী ১১ জন শিক্ষার্থীর রোল নাম্বার নেন এবং বলেন আরও যাদের এমন হয়েছে তাদের রোল নাম্বার দিতে। তিনি বোর্ডে যোগাযোগ করবেন যাতে পরীক্ষার ফলাফলে কোনো সমস্যা না হয়।
এ বিষয়ে হল সচিব আশেক উল্যাহ চৌধুরী বলেন আমি এই কথা বলিনি, কথাটি ডিজি সাহেব বলেছেন। তাদের প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে খাতা মূল্যায়ন করা হবে। নতুন ও পুরাতন সিলেবাসে কোন পার্থক্য নেই সবই এক।
এ বিষয়ে হালিমুন্নেছা চৌধুরীরাণী মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা নিনা জানান, বিষয়টি আমি পরীক্ষা চলাকালিন জানতে পারি, পরে এই বিষয়ে আমি তাৎক্ষনিক হল সচিবকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে আমাকে জানান। পরীক্ষা শেষে জানতে পারি তিনি কোন পদক্ষেপই নেননি। পরে শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরবর লিখিত অভিযোগ করেছে। আমাদের বিদ্যালয়ের ৫৬ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ২০/২৫ জনের এ রকম হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ চাঁন মিয়া জানান, অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের ফলাফলে কোন সমস্যা হবেনা কারণ আমরা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর ফলাফলের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পদক্ষেপ নিয়েছি।
ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ কামাল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। টিচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য ২ জন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। ছাত্রীদের যেনো কোন ক্ষতি না হয় সে জন্য কারিগরি বোর্ডে কন্ট্রোলারের সাথে কথা হয়েছে যাতে এই পরীক্ষার্থীদের খাতা পুর্ণমূল্যায়ন করা হয়। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও দেয়া হয়েছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page