• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন

মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন বিদেশে নতুন বাজার বের করুন :প্রধানমন্ত্রী

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসা করে লাভের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে পদক্ষেপ নিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের শুধু একদিকে তাকালে চলবে না। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নতুন দেশ, নতুন নতুন জায়গা খুঁজে বের করতে হবে, নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে এবং সেইসব বাজারে কোন ধরনের পণ্য রপ্তানি করা যায় সেটাও খুঁজে বের করতে হবে। দেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধ করতেই এটি জরুরি।’ গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা’র উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ বছর ওষুধ শিল্পকে ‘প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করে বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প একটি উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প। দেশের চাহিদার ৯৮ শতাংশ যোগান দিয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকাসহ শতাধিক দেশে ওষুধ রপ্তানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ওষুধ শিল্পের উন্নতির লক্ষ্যে মুন্সিগঞ্জে এ শিল্পের কাঁচামাল উত্পাদন পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু করেছি।

উত্পাদিত পণ্যের মান নিশ্চিত করা, ব্রান্ডিং করা এবং এগুলোকে আকর্ষণীয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যা যা সাহায্য করার তা তার সরকার করে যাচ্ছে এবং করে যাবে। তিনি বলেন, সবসময় মাথায় রাখতে হবে বর্তমান বিশ্ব অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। এই প্রতিযোগিতাময় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তিনি ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকদের বলেন শুধু নিজেদের আর্থিক স্বচ্ছলতা আনলেই হবে না। সাথে সাথে মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

দেশের ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশীয় উদ্যোক্তাগণ তাঁদের নতুন পণ্য প্রদর্শনীর সুযোগ পান। আবার দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদার একটি চিত্রও তাঁরা পেয়ে থাকেন। ফলে পণ্যের মানোন্নয়ন ও বহুমুখী করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। জাতির পিতাই স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মনোযোগী হবার পাশাপাশি শিল্প-উত্পাদনের দিকে নজর দেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি পশ্চিমাদের ফেলে যাওয়া কলকারখানাগুলো জাতীয়করণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিশ্বের ৪৬তম বৃহত্তম অর্থনীতি। গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.২৮ শতাংশ। এখন আমদানি ব্যয়ের ৭৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণ আয় থেকে মেটানো হচ্ছে। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক অধিকাংশ সূচকে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলিকে ছাড়িয়ে গেছে।

আমাদের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই একটা দেশকে উন্নয়ন করতে হলে শিল্পায়নে যেতে হবে। কিন্তু কৃষিকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। কৃষিটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, কৃষির মধ্যদিয়েই আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী আইসিটি খাতের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, দেশে এখন ৮ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে এবং ১৬ কোটি মানুষের দেশে মোবাইল ফোনের ১৩ কোটি সিম সংযোগ রয়েছে। তিনি এ সময় দেশে মোবাইল ফোন সংযোজনকে উত্সাহিত করে বলেন, এসব পণ্যতো আমরা নিজেরাই উত্পাদন করতে পারি। এখন দেশে কিছু কিছু অ্যাসেম্বিলিং হচ্ছে। এটাকে আরো আমরা গুরুত্ব দিতে পারি। প্রধানমন্ত্রী আইসিটি খাতের দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান।

চামড়া খাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে আমরা চামড়া খাতকে ‘প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার’ ঘোষণা করেছিলাম। সেইসাথে চামড়া শিল্পের উন্নয়নে আমরা ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছি। বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান এবং নতুন বছর সবার জন্য আরো উন্নতি এবং প্রগতি নিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী বণিজ্য মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

মেলায় ১৭ দেশের ৪৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশের মাঠে বাণিজ্য মেলার ২৩তম এই আসরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে এই মেলার আয়োজক। থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, সিঙ্গাপুর, মরিশাস ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৭টি দেশের ৪৩টি প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশ নিচ্ছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page