• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন

কোটা সংস্কার আন্দোলন ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টা হয়েছে: কাদের

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮

তারেক রহমান লন্ডনে বসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) নয় বছর ধরে আন্দোলনের ডাক দিয়েও নয় মিনিটের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। আমরা বাধাও দেইনি। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ওই তারেক রহমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আমরা দেখেছি, তারেক রহমান লন্ডনে বসে এ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে। তার একটি অডিও টেপ আমরা শুনেছি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ছাত্ররা যখন ফিরে গেল তখন বিএনপির নেতৃত্ব চুপসে গেছে।

মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ প্রমাণ হয়ে গেছে, বিএনপি মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে নির্বাচনের সময়। তারা মুক্তিযুদ্ধকে চেতনায় লালন করে না। যারা ক্ষমতায় এসে জাতির পিতার হন্তারকদের পুরস্কৃত করে আমরা তাদের মুক্তিযোদ্ধা বলে স্বীকার করি না। তারা শুধু নির্বাচনের ইশতেহারে মুক্তিযুদ্ধোকে ব্যবহার করে, মানুষকে প্রতারিত করে।

দুর্ঘটনাক্রমে আজ অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন বলেন, জাতির পিতার হন্তারকদের যারা পুরস্কৃত করে, পুনর্বাসন করে তারা কি মুক্তিযোদ্ধা? তারা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী? তিনি বলেন, অনেকে ফ্রিডম ফাইটার, দুর্ঘটনাক্রমে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা। জাতির পিতার হত্যাকারীদের যারা পুরস্কৃত করে তাদের আমরা মুক্তিযোদ্ধা বলি না।

বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ যারা মুজিবনগর দিবস পালন করছে না, মীমাংসিত বিষয় নিয়ে যারা বিকৃতি করে তারা জাতির কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, যারা ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ মেনে নিতে পারেনি আজ তাদের মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেছে। এখনও তারা পাকিস্তানের প্রভুদের দাসত্ব করে।তিনি বলেন, যে দল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন করে, ক্ষমতায় থেকে গণমাধ্যম, টেলিভিশন, বেতারে জাতির পিতাকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল; বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসের বঙ্গবন্ধুর নামটি তারা উচ্চারণ করে না। এটাই আজ আমাদের প্রশ্ন।

তিনি বলেন, ৭ মার্চ দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ ভাষণ, এটা স্বীকৃত, অথচ বিএনপি ও তার দোসররা দিবসটি পালন করে না। তারা মুক্তিযুদ্ধ মানে কিনা সন্দেহ আছে।

আলোচনা সভায় মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল মেটানো, সদস্য সংগ্রহ, পোলিং এজেন্ট নিয়োগ ও ঢাকা মহানগর কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ছোট ছোট সমস্যার সমাধান ঘরে বসে করে ফেলুন। ঝগড়াঝাঁটি করে সমাধান হবে না। এ জন্য আমি যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছি তার মধ্যেই করুন। ছোটখাটো মনোমালিন্য নির্বাচনের সময় বড় ধরনের বিভেদে পরিণত হয়। যাদের নামে অভিযোগ আছে তাদের নিয়ে বসুন।

কাদের বলেন, অনেকেই ইচ্ছা নেতৃত্ব দেবেন, এমপি প্রার্থী হবেন। সবার আমলনামাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে। ছয় মাস পরপর মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নিয়ে জরিপ করা হচ্ছে। জরিপে যাদের নাম আসবে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন তারাই পাবেন বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, মানুষকে মারা যায় কিন্তু তার স্বপ্নকে কখনও মারা যায় না। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তার স্বপ্ন বেঁচে আছে। সেই স্বপ্ন এগিয়ে নিচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার পাশে আমাদের থাকতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্র যেন এ অগ্রযাত্রা রুখে দিতে না পারে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে সেই দেখানো পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের মধ্যদিয়ে তাদের চালানো এ অপচেষ্টা কখনো সফল হবে না। কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে শেখ হাসিনার সরকার মাথানত করবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কটাক্ষ করে, শহীদ সংখ্যা নিয়ো প্রশ্ন তোলে তাদের এ দেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, দলটি আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন স্বীকার করে না। তারা এখন নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করছে। তাদের এ অপচেষ্টা রুখে দিতে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মহিবুল হক চৌধুরী নওফেল, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ