• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৭ অপরাহ্ন

তানোরে দু’শিক্ষকের জম্পেশ প্রাইভেট বাণিজ্য

আপডেটঃ : রবিবার, ৬ মে, ২০১৮

তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একশ্রেণীর মুনাফাখোর শিক্ষক শিক্ষা নিয়ে রিতিমতো বাণিজ্য করছে, মানছেন না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা। এতে প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি এক দেশে দুই আইন না শিক্ষকরা সরকারের থেকেও বেশি শক্তিশালী, যদি সেটা না তাহলে প্রকাশ্যে দিবালোকে এসব শিক্ষকরা এই অপকর্ম করছেন কি ভাবে ?। এদিকে শিক্ষকদের পকেট ভরাতে গিয়ে অভিভাবকগণ নিঃস্ব হচ্ছে আবার অনেকে প্রাইভেটের খরচ বহনে ব্যর্থ হয়ে পড়ালেখা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। আর প্রাইভেট পড়ানো অত্যাধিক লাভজনক হওয়ায় এসব শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে সঠিকভাবে পাঠদান করাচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থী বাধ্য হচ্ছেন প্রাইবেট পড়তে। অথচ শিক্ষকদের শ্রেণীকক্ষে পাঠদানে মনোযোগী করার লক্ষ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় ২০০৮ সালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধের নির্দেশনা (পরিপত্র) জারি করেছেন। কিšত্ত তানোরে শিক্ষকরা সেই নির্দেশনা মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তানোরের মুন্ডুমালা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (গণিত) ইব্রাহিম হাবিবুল্লাহ তার নিজ বাড়িতে প্রতিদিন দুই সিফটে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে তারা প্রাইভেট পড়েন তাছাড়া প্রাইভেট না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ভীতি দেখানো হয় তাই তারা বাধ্য হয়ে এখানে প্রাইভেট পড়েন। তবে শিক্ষক ইব্রাহিম হাবিবুল্লাহ এসব অভিযোগ অন্বীকার করে বলেন, আমরা কখনও কাউকে জোর করে প্রাইভেট পড়াতে চাই না ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনেই তারা আমাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসে, আবার অনেক শিক্ষার্থীর অভিবাবকের অনুরোধে তাদের পড়াতে হয়। তানোরের মোহাম্মদপুর স্কুলের সহকারী শিক্ষক (রসায়ন) দুরুল ইসলাম তেলোপাড়া তার নিজ বাড়িতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। এক সঙ্গে এতো শিক্ষার্থীর প্রাইভেট পড়ানো দেখে প্রথমে যে কেউ বলবেন এটা স্কুল। অথচ এসব প্রাইভেট পড়ানো শিক্ষা নীতিমালার সুস্পস্ট লঙ্ঘন হলেও বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নাই। এছাড়াও কচুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইদ্রিস আলী নীতিমালা লঙ্ঘন করে মুন্ডুমালা স্কুলের ঘর ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করছে। স্থানীয় অভিভাবকগণ এসব মুনাফাখোর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানোর উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, একশ্রেণীর শিক্ষক রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা না করে টিউশনি করতে ব্যস্ত থাকেন। এসব শিক্ষকের টিউশনি করার প্রবণতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, আর তা না হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এব্যাপারে তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের টিউশনি বন্ধের জন্য পত্র পাঠানো হয়েছে। এর পরও যদি কেউ টিউশনি বন্ধ না করে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ