• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

ব্রিটিশ নাগরিক পরিচয়ে কোম্পানি খোলেন তারেক

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : রবিবার, ৬ মে, ২০১৮

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ব্রিটিশ নাগরিক পরিচয়ে ২০১৫ সালে ‘হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্টস লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বহাল থাকা-না থাকা নিয়ে বিতর্ক চলার মধ্যে তারেক রহমানের এমন তথ্য প্রকাশ পাওয়ায় দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তারেকের স্ত্রী জোবাইদা রহমানও প্রাইভেট লিমিটেড ওই কোম্পানির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। কোম্পানির নথি অনুসারে ১০০ শেয়ারের ৫০ শতাংশ হচ্ছে তারেক রহমানের এবং বাকি ৫০ শতাংশ তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের। কোম্পানির নিবন্ধন নম্বর ০৯৬৬৫৭৫০। নিবন্ধন তারিখ ১ জুলাই, ২০১৫। কোম্পানিটি ‘চ্যারিটি ইন করপোরেট’ হিসেবে ছোট ব্যবসা হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকারের কোম্পানিস হাউসে দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণীতে তারেক রহমান উল্লেখ করেছেন, তার বসবাসস্থল- ইংল্যান্ড, জন্ম তারিখ ২০-১১-১৯৬৭, জাতীয়তা-ব্রিটিশ, পেশা-পরিচালক। companycheck.co.uk সাইটেও ‘হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্টস’ কোম্পানির পরিচালক হিসেবে তারেক রহমানের পরিচয় ব্রিটিশ নাগরিক উল্লেখ করা হয়েছে। অবশ্য তারেক রহমান  পরবর্তী সময়ে নাগরিকত্বের তথ্য সংশোধন করান। কোম্পানিস হাউসে পরের বছর ৩০ জুন জমা দেওয়া ‘কনফারমেশন স্ট্যাটমেন্ট’-এ তারেক রহমান নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে উল্লেখ করেন। কোম্পানিতে ব্যবহূত ঠিকানা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসভবনের বলে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা। তবে তারেক রহমানের এই কোম্পানিটি ঠিক কোন ধরনের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সে সম্পর্কে তিনি তেমন কিছু জানেন না বলে জানান।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে কোম্পানির নিবন্ধন গ্রহণের সময় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী দুজনের ঠিকানাই ‘৩ কটসওয়ার্ল্ড ক্লোজ, কিংসটন আপন টেমস, ইংল্যান্ড, কেটি২ ৭জেএন’ উল্লেখ করা হয়। এ ঠিকানায় তারেক রহমান বর্তমানে সস্ত্রীক বসবাস করছেন। তবে ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর ঠিকানা পরিবর্তন করেন তারেক রহমান। পরিবর্তিত ঠিকানা : স্যুট ওয়ান ২, হাইডনস রোড, লন্ডন, এসডাব্লিউ১৯ ১এইচএল। নিয়ম অনুসারে ২০১৭ সালের ৩০ জুনও তারেক রহমান আরেক দফা ‘কনফারমেশন স্ট্যাটমেন্ট’ জমা দেন। তবে সে সময় কোনো তথ্য সংযোজন-বিয়োজন করা হয়নি বলে জানাচ্ছে  কোম্পানিস হাউস।
‘প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি’ হিসেবে নিবন্ধিত ‘হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্টস লিমিটেড’ এখন সক্রিয় বলে জানাচ্ছে ব্রিটেন সরকারের সাইটটি। ব্যবসার ধরন বলা হচ্ছে ‘পাবলিক রিলেশন ও কমিউনিকেশনস অ্যাকটিভিটিস’। ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানিটির হিসাবের তথ্য জমা দেওয়া আছে; পরবর্তী হিসাব দিতে হবে এ বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে। কোম্পানিস হাউস সাইটে তারেক রহমানের কোম্পানির যেসব নথিপত্র সংযোজন করা হয়েছে, তাতে ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত অস্থাবর সম্পদ হিসেবে ২৮৭০ পাউন্ডের হিসাব রয়েছে। তবে ব্যাংকে ও হাতে নগদ ৩৮ পাউন্ড থাকার কথা বলা আছে। কোম্পানির পরিচালক হিসেবে তারেক রহমানের দেওয়া পরের বছরের এক নথিতে বলা হয়েছে, তাদের স্থাবর সম্পত্তি ২১৫২ পাউন্ড এবং চলতি সম্পদ ৯৬০৩ পাউন্ড। ২০১৮ সালের ২১ এপ্রিলের তথ্য অনুযায়ী কোম্পানিটি মাইক্রো কোম্পানি হিসাবে ১ আগস্ট ২০১৬ থেকে ৩১ জুলাই ২০১৭ সালের ব্যবসা সংক্রান্ত প্রথম রিটার্ন জমা দেয়।
এ সংক্রান্ত সব তথ্য-উপাত্তই এখন পাওয়া যাচ্ছে beta.companieshouse. gov.uk/company/09665750 ঠিকানায়। সাইটে ঢুকে ‘ফাইলিং হিস্ট্রি’তে ক্লিক করতে হবে। উল্লিখিত তথ্যানুযায়ী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে ব্রিটিশ নাগরিক হিসাবেই বসবাস করছেন ব্রিটেনে। কোম্পানি হাউজে তারেক রহমানের শুরুতে দেওয়া ব্যক্তিগত তথ্য বিবরণী অনুযায়ীও তিনি ব্রিটিশ নাগরিক।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page