• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ

আপডেটঃ : শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮

পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি॥
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই কিনতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক সমিতির সরবাহ করা সহায়ক বইয়ের তালিকা অনুযায়ী নির্দিষ্ট লাইব্রেরি থেকে বই কিনতে বলছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর বই না কিনলে শ্রেণি কক্ষে সহায়ক বই থেকে প্রশ্ন করে শিক্ষার্থীদের হেনন্তা করছেন শিক্ষকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানায়, সামনে তার জেএসসি পরীক্ষা। তাই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে সহায়ক বইগুলো কিনতে স্কুল থেকে বলা হয়েছে । আর এতে পরীক্ষায় নাকি কমন পাওয়া যাবে। এজন্যই বইগুলো কিনতে হচ্ছে। আরেক শিক্ষার্থী বলে, “সহায়ক বই তো কিনতেই হবে। কারণ ক্লাসে তো স্যাররা ঐসব বই থেকে পড়া দিচ্ছেন।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, “এসব সহায়ক বই আদৌ কোন প্রয়োজন আছে কি না জানি না।” আরেক অভিভাবক বলেন, “সরকার ফ্রি বই দেওয়ার পরেও যদি হাজার টাকায় আমাদের সহায়ক বই কিনতে হয় তাহলে সরকারের ঐসব ফ্রি বইয়ের দরকার কি। ফ্রি বই তো শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন না।” ষষ্ঠ শ্রেণির একসেট বই কিনতে হাজারের উপরে টাকা লাগছে জানিয়ে এক অভিভাবক বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ ছেলেকে কিনতে বলেছে, তাই কিনে দিতে বাধ্য হয়েছি।” কৃষি কাজের সাথে জড়িত এক অভিভাবক বলেন, “সহায়ক বইগুলোর যে চড়া দাম দুই বস্তা ধান বিক্রি করেও ছেলের এক সেট বই হয় না। সরকার কি এইগুলো দেখবে না।” তবে শিক্ষকরা এ অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্যই তারা চাপ নয়, সৎ পরামর্শ দেন। পুস্তক তালিকা অনুযায়ী লাইব্রেরি গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণির এক সেট সহায়ক বই কিনতে অভিভাবকদের এক হাজার ৫০০ টাকা, সপ্তম শ্রেণির এক হাজার ৮০০ টাকা, অষ্টম শ্রেণির এক হাজার ৯৫০ টাকা, নবম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার সাড়ে তিন হাজার ও মানবিক শাখার দুই হাজার ৮০০ টাকা লাগছে। এদিকে বই কিনতে গিয়ে আরেক বিড়ম্বনায় পড়ছেন অভিভাবকরা। প্রতি শ্রেণির সেট ছাড়া কোন বই আলাদা বিক্রি করছেন না বিক্রেতারা।
শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, এ উপজেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮২টি আর এগুলোর ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৯ হাজার। সহায়ক বই এর তালিকা উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে সরবরাহ করার কথা স্বীকার করে শিক্ষক সমিতির নেতা কায়সার আলী বলেন, ‘আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, শিক্ষার্থীরা বোর্ড বইয়ের পাশাপাশি সহায়ক বইয়ের সহযোগিতা নিলে ফলাফল ভালো করবে।” তবে এসব বই শিক্ষার্থীদের কিনতে বাধ্য করার কথা তিনি অস্বীকার করেন। লাইব্রেরির মালিক সমিতির সভাপতি চিত্র রায় বলেন, “নোট ও গাইড বইগুলো আমরা ছাপি না। রাজধানী ঢাকাসহ সব জায়গায় খোলামেলাভাবে এগুলো বিক্রি হয়, আমরাও বিক্রি করে থাকি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম সাঈদ হোসেন বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় নতুন এসেছি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে ইংরেজি গ্রামার ও বাংলা ব্যাকরণ বই শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে। আলাদাভাবে গাইড বই কেনার প্রয়োজন নেই।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ বলেন, “খোঁজ নিয়ে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ