• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৩৯ অপরাহ্ন

বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় চ্যালেঞ্জ প্রযুক্তি-অর্থায়ন: জ্বালানি উপদেষ্টা

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৬ জুন, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়তে সরকার কাজ করছে। তখন বিদ্যুতের চাহিদা হবে ৬০ হাজার মেগাওয়াট। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত ও অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বেসরকারি এবং বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। দেশের জ্বালানির বাজার এখন বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত।
মঙ্গলবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সামিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। চীনের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি উইসপুল গ্রুপ, ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস ফোরাম এবং এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন দেশে দ্বিতীয়বারের মত দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি সাশ্রয়ে মনোযোগ দিতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভবিষ্যতে বড় সমাধান নিয়ে আসতে পারে। তবে এখন বিদ্যুতের তিনটি হাব, কয়লা এবং পারমানবিক বিদ্যুৎ থেকে জ্বালানি চাহিদার বড় অংশ মেটানো হবে। এলএনজি আমদানি প্রয়োজন মত করা হবে। সংকট যেন না হয় তাই এলএনজি মজুদের জন্য ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত বা পরিত্যক্ত হবে এমন গ্যাসকূপগুলোকে ব্যবহার করা হতে পারে। এ জন্য উপযোগিতা যাচাই করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। কিন্তু অনেক মানুষ। বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি প্রয়োগে উদ্ভাবনী শক্তি-চিন্তা ব্যবহার করতে হবে।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, দেশে সৌর বিদ্যুতের সুবিধা পাচ্ছে প্রায় ২ কোটি মানুষ। বেসরকারি পর্যায়ে উৎপাদিত ছোট ছোট বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পও সহায়ক হতে পারে। যেমন দেশে যদি সব কারখানার ছাদে সৌর প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, সেটি বড় কাজ হবে। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ কিংবা বন্ধের দিন ওই কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আসলে অংশগ্রহণমূলক বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনন্য দৃষ্টান্তও দেশে তৈরি হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সরকার ২০০৯ সালে এসে বিদ্যুৎ নিয়ে বিপদ দূর করতে রেন্টাল কেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছিল। এখন টেকসই জ্বালানি খাত নিশ্চিত করতে সমন্বিত জ্বালানি মিশ্রণ নিশ্চিত করা হবে। ইতিমধ্যে মহাপরিকল্পনা প্রণয়নও করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রাইস ওয়াটারহাউজ কুপারস (পিডব্ল্উিসি) বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর দ্বিতীয় সেশনে মোট ৫টি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন হয়। সেখানে পিডব্লিউসি’র সিনিয়র কনসালটেন্ট নাবিলা সাজ্জাদের সঞ্চালনায় পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন, বেজার নির্বাহী সদস্য (অতিরিক্ত সচিব) এমদাদুল হক, এডিবির বাংলাদেশ রেসিডেন্ট মিশনের সিনিয়র প্র ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিষ্ট সেরিন ইব্রাহিম, ওয়াল্ড নিউক্লিয়ার এসোসিয়েশনের সিনিয়র অ্যাডভাইজার শাহ নেওয়াজ আহমেদ, পিডব্লিউসি’র মামুন রশিদ বক্তব্য রাখেন। দুইটি প্যানেল ডিসকাশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে এলএনজির বাজার এবং বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, বিনিয়োগ ও আঞ্চলিক অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। ৩০ হাজার একর জমির ওপর এই অঞ্চলগুলো স্থাপন করা হচ্ছে। এসব অঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে হবে।
আরইবি জানায়, দেশে শতভাগ শিল্পায়ন হলে প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট নতুন বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হতে পারে।এরমধ্যে সরকারি ৩১টি শিল্প পার্কের জন্য দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট এবং বেসরকারি ইপিজেডগুলোর জন্য প্রয়োজন হবে ৫২৭ মেগাওয়াট। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসাইন জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে। এজন্য এসব বিশেষ অঞ্চলে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করলে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে বেশকিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page