তানোর প্রতিনিধি॥
আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী অঞ্চলের অধিকাংশ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হতে পারে বলে নেতা ও কর্মী-সমর্থকদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের অভিমত, জনবিচ্ছিন্ন ও বির্তকিতদের বাদ দিয়ে তরুণ ও জনমত জরিপে এগিয়ে রয়েছে এমন প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হতে পারে অধিকাংশ আসনে জয় ধরে রাখতে প্রার্থী পরিবর্তন ব্যতিত বিকল্প নাই। ফলে রাজশাহী অঞ্চলে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে এসনকি কোথাও কোথাও আবার পরিবর্তনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে বলেও গুঞ্জন বইছে। এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে সম্ভবনাময় নতুন প্রার্থীদের আলোচনায় শীর্ষে রয়েছে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুন্ডুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী এবং রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ তাদের ঘিরে তৃণমূলে জমে উঠেছে রাজনীতির মাঠ বলে অভিমত তৃণমূলের। ইতমধ্যে রাজশাহীর অধিকাংশ সংসদীয় এলাকায় এমপিদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে বেড়েছে কলহ-বিদাদ, মতবিরোধ ও দলীয়কোন্দল। অধিকাংশ এলাকায় এমপিদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝাড়– মিছিল, সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এমনকি আগামি নির্বাচনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি তুলেছে নইলে স্বপক্ষ ত্যাগের মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। অনেক এলাকায় এমপি আচরণের কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ এখন আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। কারো কারো বিরুদ্ধে আবার আতœীয়করণ, স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম-দূর্নীতি, জামায়াত-বিএনপি প্রীতি, প্রবীণ-ত্যাগীদের উপেক্ষা-অবমূল্যায়ন করে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিডদের অধিক মূল্যায়ন ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের নিয়ে এসে আওয়ামী লীগে সাংগঠনিক পদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।।অথচ বঞ্চিত ও ছুড়ে ফেলা হয়েছে দীর্ঘদিনের পরিক্ষীত, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের। এসব কারণে রাজশাহীর অধিকাংশ এমপির ওপর আওয়ামী লীগের তৃণমূল খুব্ধ রয়েছে। অধিকাংশক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) নেতৃত্ব আর রাজনীতিবিদদের হাতে নাই চলে গেছে ব্যবসায়ী ও আমলাদের হাতে। রাজনৈতিক নেতৃত্ব রাজনীতিবিদদের হাতে না থেকে অরাজনৈতিকদের হাতে চলে যাওয়ায় তৃণমূলের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। কারণ এরা কখনই তৃলমূলে বা দলের কঠিন সময়ে রাজনীতি করেনি এরা কিভাবে তৃণমূলের দুঃখ-কষ্ট বুঝবে। অনেকেই কালো টাকা ও পেশি শক্তির জোরে নেতৃত্ব বাগিয়ে নিয়েছেন বলেও জনশ্র“তি রয়েছে। এসব বিবেচনায় এবার নৌকার বিজয় ধরে রাখতে রাজশাহীর অনেক আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করে জনমত-জরিপের এগিয়ে রয়েছে এমন নতুন প্রার্থী বা নেতৃত্ব দেয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন বইছে।
সম্প্রতি রংপুর সিটি কর্পোরেসন ও বাঘা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের (ভরাডুবি) পরাজয়ের মধ্যে দিয়ে এই আশঙ্কার সূত্রপাত হয়েছে। তবে তৃণমূল এটাকে আওয়ামী লীগের পরাজয় নয় প্রার্থীর পরাজয় বলে দাবি করেছে। কারণ হিসেবে তারা বলছে, আওয়ামী ণীগের উন্নয়ন ও অর্জন তুলে ধরে প্রচার এবং বিপুল জনসমর্থন ও বিশাল কর্মী বাহিনী কাজে লাগাতে পারলে আওয়ামী লীগের বিজয় কেঊ ঠেকাতে পারবে না। কিšত্ত একশ্রেণীর নেতাদের আচরণের কারণে আওয়ামী লীগের বিপুল জনসর্মন ও বিশাল কর্মী বাহিনীকে কাজে লাগানো যায়নি, এরা নির্বাচিত হয়েই রাজা বনে গেছে আর জনগণকে প্রজা ভেবে জমিদারি শাসন কায়েম করেছে। এরা কখনো ভেবে দেখেনি যে ভোট চাইতে তাদের আবারো তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। আসলে প্রকৃত রাজনীতিবিদ না হলে যা হয়। যদি তৃণমূল থেকে এরা উঠে আসতেন তাহলে তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারতেন। এসব কারণে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের এক জৈষ্ঠ নেতা বলেন, আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর আধিকাংশ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ববনা রয়েছে। তিনি বলেন, বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে জামায়াত-বিএনপি প্রীতি ও আচরণ খারাপের অভিযোগ রয়েছে তাদের মনোনয়ন পাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত।
You cannot copy content of this page