তানোর প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরের মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চুঁনিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের পুত্র এন্তাজ আলীর বিরুদ্ধে চুঁনিয়াপাড়া মৌজায় হাজী একতার আলী ওয়াকফ্ এস্টেটের সম্পত্তি অবৈধ দখলে রেখে তছরুপ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১৪ জুলাই শনিবার এলাকাবাসি বাদি হয়ে বাংলাদেশ ওয়াকফ্ প্রশাসক, ধর্ম মন্ত্রণালয় ও দূর্দীতি দমন কমিশনে (দুদুক) লিখিত অভিযোগ করেছেন। অথচ এর আগেও ওয়াকফ্ সম্পত্তি তছরুপের ঘটনায় বাংলাদেশ ওয়াকফ প্রশাসনের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। প্রায় কয়েক কোটি টাকা মূল্যের ওয়াকফ্ সম্পত্তি অনিয়ম ও দূর্ণীতির মাধ্যমে তছরুপের অভিযোগ থাকলেও তছরুপকারীদের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে চাঁপাক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। সরেজমিন অনুসন্ধান করলেই এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির সত্যতা পাওয়া যাবে। গ্রামবাসি জানান ১৪ জুলাই শনিবার মুন্ডুমালা পৌর কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়েছে তবে কোনো সমাধান হয়নি।
জানা গেছে, তানোরের মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চুঁনিয়াপাড়া গ্রামের জামে মসজিদের নামে ১২৭ বিঘা ও স্কুলের নামে ৩৮ বিঘা চার ফসলি জমি ওয়াকফ্ করে গেছেন হাজী একতার আলী। আবার তানোরের কুঠিপাড়া জামে মসজিদ ও গোল্লাপাড়া বাজার জামে মসজিদের উন্নয়নে অর্থ ব্যয় করতে বলা হয়েছে। এদিকে হাজী একতার আলী ওয়াকফ্ এস্টেটের মোত্তাওয়ালী নিয়োগে সুনিদ্রিষ্ট শর্ত দেয়া হয়েছে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে প্রথমত মোত্তাওয়ালীকে ইসলাম ধর্মভীরু তথা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও ইসলাম প্রচার করতে হবে, দ্বিতীয় প্রতিবছর মোত্তাওয়ালীকে গ্রামের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত দরবারে আয়-ব্যয়ের হিসাব-নিকাশ দিতে হবে ও মুনাফার টাকায় ওয়াকফ্ এর নামে সম্পত্তি কিনতে হবে, তৃতীয় ওয়াকফ্ সম্পত্তি কোনো অবস্থাতেই বন্ধক বা বিক্রি করা যাবে না, চতুর্থত গ্রামের কোনো অহায় ব্যক্তির কন্যা দানে সহায়তা ও এতিমের লেখা পড়ার দায় নিতে হবে ইত্যাদি শর্ত রয়েছে। কিšত্ত মোত্তাওয়ালী এন্তাজ আলী কোনো শর্তই পূরুণ করেননি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এন্তাজ আলী নিয়ম লঙ্ঘন করে ওয়াকফ্ সম্পত্তি বন্ধক ও হিসাব-নিকাশ না দিয়ে লাখ লাখ টাকা তঝরুপ করে চলেছে। তারা বলেন, মসজিদের নামে ১২৭ ও স্কুলের নামে ৩৮ বিঘা চার ফসলী জমি থাকলেও এখানো মসজিদ ঘরের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়নি স্কুলেরই একই অবস্থা। ওয়াকফ্ প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তার যোগসাজশে একতার আলী ওয়াকফ্রে প্রায় ১৬৫ বিঘা সম্পত্তি এন্তাজ আলী বছরের পর বছর ধরে তছরুপ করে চলেছেন। অথচ এন্তাজ আলীর এখন এক ছটাক ফসলী জমি না থাকলেও প্রায় কোটি চাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন বাড়ি নির্মাণ ও মোটরবাইক কিনে বেশ বিলাসী জীবনযাপন করছেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে হাজী একতার আলী ওয়াকফ্ এস্টেটের মোত্তাওয়ালী এন্তাজ আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি সব নিয়মকানুন মেনেই মোত্তাওয়ালীর দাযিত্ব পালন করে চলেছেন। এব্যাপারে চুঁিনয়াপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক লিয়াকত আলী বলেন, মোত্তাওয়ালী হবার পর থেকে এন্তাজ আলী একটি টাকারও কোনো হিসেব স্কুল কর্তৃপক্ষকে দেননি।