হাইকোর্টে মামলার বিচার বাধাগ্রস্ত করার জন্যই কারাগারে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাটক মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং দলের অন্যতম মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সঠিক কথাই বলেছেন। প্রকৃতপক্ষে বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলা এই মাসের ২৬ তারিখের মধ্যেই নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্টের একটি নির্দেশনা আছে। তা ঠেকানোর জন্যই বেগম জিয়া কারাগারে অসুস্থতার নাটক মঞ্চায়ন করছেন। উনি যদি খুব অসুস্থই হন। তাহলে কোন হাসপাতালে যান না কেন? কোন অসুস্থ মানুষের পক্ষে তো হাসপাতাল পছন্দ করার সুযোগ থাকে না।
মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে মাওলানা ভাসানী ঐক্যজোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপিই চায় না বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাক মন্তব্য করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দুর্নীতির দায়ে শাস্তি প্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে বিএনপি এবং তাদের আইনজীবী দলের ইদানিং কোন তৎপরতা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আপনারা (বিএনপি) মনে করেন বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকলে আপনাদের ভোট বাড়ে। সেই জন্যেই বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট নয় বিএনপি। প্রকৃতপক্ষে বিএনপিই চাই না বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাক।
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, বেগম জিয়া কারাগারে যে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয় গত সত্তর বছরের ইতিহাসে দেশ বিভাগের পর এমনকি ব্রিটিশ অামলেও এমন সুযোগ সবিধা কেউ পেয়েছে কিনা আমার জানা নাই। কারণ কারাগারের মধ্যে সার্বোক্ষণিক একজন মহিলা নার্স এবং কারাগারে একজন ডাক্তার সকাল বিকেল তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এছাড়া এয়ারকন্ডশনিং রুম, আলাদা রান্নাঘর, রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন এমনকি তার পছন্দের গৃহপরিচারিকাও তার সঙ্গে কারাগারে বসবাস করছে। সুতরাং এতো সুযোগ সুবিধা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে খুব আরাম আয়েশের মধ্যেই অাছেন।
তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়া যখন কারাগারের বাইরে ছিলেন তখনও তিনি ঘরের মধ্যেই বেশিরভাগ সময় থাকতেন। সেই ঘরের বদলে তিনি আরেকটি ঘরের মধ্যে আছেন অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ। আর আদালতের মামলার তারিখ পড়লে তিনি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন এবং উনার সভাসদ, উনি প্রচণ্ড অসুস্থ এই কথা বলে বেড়াচ্ছেন।
সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মাহমুদুর রহমানের ওপর দুষ্কৃতিকারীদের হামলা আমরা সমর্থন করিনা। এই হামলা অবশ্যই সমর্থন যোগ্য নয়। আমারা সেটি আগেও বলেছি, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদকও বলেছেন। হামলা হওয়ার পরপরই ছাত্রলীগের ওপর দোষ দিলেন অথচ সেখানে ছাত্রলীগের কেউ ছিলো না এবং কেউ দেখেও নাই।
এ সময় তিনি ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানান, মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার বিচার ও তদন্তের দাবি করার জন্যে।
‘দুই মাসের মধ্যে দেশের রাজনীতির অনেক পরিবর্তন হবে’ বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদের সাম্প্রতিক এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে রাজনীতিতে কোন পরিবর্তন হবে না। তবে দুই মাসের মধ্যে মওদুদ আহমেদের কোন পরিবর্তন হয়ে যাবে কিনা সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন?
বিএনপিকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার হাঁটুতে তো দুইবার অপারেশন হয়েছে। আপনাদের রাজনীতি কি তবে বেগম জিয়ার হাঁটুর ব্যাথার মধ্যে আটকে থাকবে। দয়া করে আপনাদের রাজনীতিটাকে খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যাথা থেকে মুক্ত করুন।
আয়োজক সংগঠনের অাহ্বায়ক বঙ্গদীপ এম এ ভাসানীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ বেনজির আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বদিউল আলম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ।