রংপুর অফিস॥
রংপুরের পীরগঞ্জে রায়পুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণী কক্ষে তালা ঝুঁলিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসীসহ অভিভাবকরা। সম্প্রতি নির্বাচন ছাড়াই ভুয়া কাগজপত্রে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবিতে বিক্ষুদ্ধরা এই কর্মসূচী পালন করেন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে এগারোটায় দিকে রায়পুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে বিক্ষুদ্ধরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জন, পাঠদানে শিক্ষকদের অসহযোগিতাসহ অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচীর ঘোষণা দেন তারা। এদিকে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কৌশিক, দশম শ্রেণীর লুবণা আকতার, আফরিন জাহান, লিখন, সাগর, আশিক, তানবীরুল, অষ্টম শ্রেণীর মিজানুর রহমান মিজান, অবসর প্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ, স্কুলের সাবেক সভাপতি ও অভিভাবক মাহমুদুল হক তুষার, সবুজ, গোলাপ প্রমুখ। এসময় তারা বলেন, সদ্য প্রয়াত প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সময় স্কুলের নির্বাচনের জন্য তফশিল ঘোষনা করা হয়েছিল। প্রার্থীরা ব্যাংক ড্রাফট করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ফরম তুলেছিলাম। কিন্ত আওয়ামীলীগ নেতা নান্নু প্রভাব খাটিয়ে সেই নির্বাচন স্থগিত করায়। পরবর্তীতে কোন ধরনের নির্বাচন ছাড়াই নান্নু মিয়া সাবেক প্রধান শিক্ষককে চাপের মুখে ফেলে একটি অবৈধ কমিটি গঠন করে নিজে সভাপতি হয়ে যান। এই চাপে ওই প্রধান শিক্ষক রফিকুল হার্ট এ্যটাক করে মারা যান। আমরা বিষয়টি জানতে পেরে এলাকাবাসীসহ অভিভাবকরা দিনাজপুর বোর্ডে এই অবৈধ কমিটি বাতিলের জন্য আবেদন করেছি। আমরা এই অবৈধ কমিটি বাতিল করে নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধ কমিটি চাই। সহকারী শিক্ষক আখতারুজ্জামান জানান, স্কুলের কমিটি কিভাবে হলো তা আমরা জানি না। এখানে কমিটি গঠনের জন্য কোন ভোট হয় নি। ওই কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য স্বপন বাবু জানান, আগের প্রধান শিক্ষক সব প্রসেসিং মেনেই কমিটি গঠন করেছেন। তবে কমিটি গঠন নিয়ে স্কুলে কোন নির্বাচন বা ভোটাভুটি হয়নি। এনিয়ে স্থানীয়রাসহ অনেকেই ক্ষুদ্ধ রয়েছেন। এ ব্যপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র রায় জানান, নির্বাচনের মাধ্যমে সব কিছু ঠিকঠাক করেই আগের প্রধান শিক্ষক এই কমিটি করেছেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় ভোট হয় নি। স্কুলের সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম নান্নু জানান, আগের প্রধান শিক্ষক আমাকে সব নিয়ম মেনে সভাপতি করেছেন। নির্বাচন হয়েছে। আমি ইউএনওর কাছে গেছিলাম। উনিও বলেছে ঠিক আছে। কিন্তু আমাকে সাবেক সভাপতি তুষার মেনে নিতে পারছে না। সে কানোছগাড়ি এলাকার কিছু অভিভাবককে দিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। অন্যদিকে পীরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন মন্ডল বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। কমিটি গঠনের বিষয়টি তদন্তে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি রংপুরের বাহিরে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনিংয়ে থাকায় তদন্ত করতে না পারায় উপজেলা নির্বাহী স্যারকে কাগজপত্র ফিরিয়ে দিয়েছি।
You cannot copy content of this page