• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৪ অপরাহ্ন

সুমন গং কর্তৃক জাল দলিল সৃষ্টির ঘটনা ফাস

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৮

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি॥
কমলগঞ্জের সোহেল রানা সুমন গং কর্তৃক ভিন্ন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে জাল দলিল সৃষ্টির ঘটনা ফাস হয়ে গেছে। সোহেল রানা সুমন কর্তৃক দলিল জালিয়াতির এ ঘটনায় তোলপাড় চলছে এলাকায়। সর্বশেষ- ভূমির প্রকৃত মালিকের মামলার প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ থানার পুলিশ উক্ত জাল দলিল জব্দ করেছে।জানা গেছে- মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাধীন মুন্সীবাজার ইউনিয়নস্থিত পরানধর গ্রামের নাগরিক ও মুন্সীবাজারের বেডিং ব্যবসায়ী প্রতারক জালাল মিয়া, তার পুত্র সোহেল রানা সুমন ও আয়মন হোসেন ইমন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইছুবপুর গ্রামের মোঃ ইব্রাহিম আলীর পুত্র আফজল আলী মান্না, কমলগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের ৫৫নং সনদধারী দলিল লেখক এম এ সালাম পরষ্পর যোগাযোগীমূলে একই গ্রামের বিভাষ রঞ্জন দাসের মৌরসী সূত্রে মালিকানাধীন পরানধর মৌজার অন্তর্গত ২৯নং জেএলভূক্ত ১৬নং এসএ খতিয়ানের ১৭৬নং এসএ দাগের ১১ শতাংশ ও ১২৫নং এসএ দাগের ০২ শতাংশ এবং মখলিছ মিয়া ও তার প্রবাসী ভাই, সাবেক চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্বা দুরুদ মিয়ার ক্রয় সুত্রে মালিকানাধীন ১৩নং এসএ খতিয়ানের ১৭৬নং দাগের ১১ শতাংশ ভুমি, ভিন্ন ব্যক্তিকে মালিক সাজিয়ে জালাল মিয়া (০২ শতাংশ) ও সোহেল রানা সুমন (২২ শতাংশ) এর নামে ১৩৮৪ ও ১৩৮৫ নম্বরের দুটি দলিল গত ১৩/০৪/২০১৭ইং কমলগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রারী অফিসে রেজিষ্ট্রি করিয়ে নেয়।
পরবর্তীতে উক্ত ২৪ শতাংশ ভূমি নিজেদের নামে নামজারী করার জন্য কমলগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে নামজারী মোকদ্দমা (নং- ২০৩২/১৭-১৮) দায়ের করলে, নিয়মানুযায়ী মোকদ্দমার শুনানীতে অংশগ্রহণ করার জন্য ভূমির মূল মালিকগণকে নোটিশ প্রেরণ করা হয়। উক্ত নোটিশ প্রাপ্ত হয়ে মূল মালিকগণ ভূমি অফিস ও সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে যোগাযোগ করে সোহেল রানা সুমন গংরা বিভিন্ন জাল কাগজাত দিয়ে ও ভিন্ন ব্যক্তিকে বিভাস রঞ্জন দাস সাজিয়ে জাল দলিল সৃষ্টির ঘটনাটি ধরা পড়ে।
এরপর মূল মালিক বিভাস রঞ্জন দাস ও মখলিছ মিয়া কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কমলগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রার বরাবর প্রতারক জালাল মিয়া ও সোহেল রানা সুমনের নামীয় মূল জাল দলিল জব্দ, দাদের দায়েরী নামজারী ও জমা খারিজ মোকদ্দমা বাতিল ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন ও কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ করেন। তাদের মাধ্যমে উক্ত সোহেল রানা সুমন গংদের সৃষ্ট জাল উত্তরাধিকার সনদ ও জাল দলিল সৃষ্টির ঘটনা অবহিত হয়ে মুন্সিবাজার ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালিব তরফদার ৩১৯/২০১৮, ৩২০/২০১৮ ও ৩২১/২০১৮নং জাল উত্তরাধিকার সনদ প্রসঙ্গে গত ১৪/০৮/১৮ইং কমলগঞ্জ থানায় একটি জিডি (নং- ৭০৬) করেন। অপরদিকে, এ জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়ে যাওয়ায়, জালিয়াত জালাল মিয়া সহকারী জজ আদালত, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার-এ স্বত্ত্ব মোকদ্দমা (নং ৪৮/২০১৮ইং) ও তার পুত্র সোহেল রানা সুমন স্বত্ত্ব মোকদ্দমা (নং ১৭৭/২০১৮ইং) দায়ের করে।
সর্বশেষ, গত ১৯/০৮/২০১৮ইং মূল মালিক বিভাস রঞ্জন দাস বাদী হয়ে ওই ৫ প্রতারকের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী নালিশা দরখাস্ত (নং- ১৮২/২০১৮, কমল) দায়ের করা হলে, বিজ্ঞ আদালত কমলগঞ্জ থানার ওসিকে উক্ত দরখাস্তটি দি পেনাল কোড ১৮৬০ এর ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৩৪ ধারায় সরাসরি এফআইআর হিসাবে গ্রহণ করতঃ এবং নিবন্ধিত ১৩৮৪/২০১৭ ও ১৩৮৫/২০১৭নং দলিল দুটি জব্দ করার ও আগামী ৩০/০৯/২০১৮ইং তারিখের মধ্যে থানার মামলা নং ও তারিখ উল্লেখসহ আদালতকে অবহিত করার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ থানার ওসি তা এফআইআর (নং- ১৭/১৮, জিআর/১৬৬/১৮) এবং জাল দলিল দুটি জব্দ করেন বলে জানা গেছে।
পরাণধর গ্রামের প্রতারক জালাল মিয়া, তার পুত্র সোহেল রানা সুমন ও আয়মন হোসেন ইমন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইছুবপুর গ্রামের মোঃ ইব্রাহিম আলীর পুত্র আফজল আলী মান্না ও কমলগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসের ৫৫নং সনদধারী দলিল লেখক এম এ সালামের এ জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকে এলাকায় চলছে তোলপাড়।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page