• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৩ অপরাহ্ন

বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতায় শ্রেণীকক্ষে পানি॥বারান্দায় চলছে ক্লাস

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
Exif_JPEG_420

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি॥
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয় মাঠে বাজারের ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ও বৃষ্টির পানি ঢুকে ব্যহত হচ্ছে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্যালয় মাঠে জমে আছে ময়লা, পঁচা, দুর্গন্ধযুক্ত পানি। যার ফলে বই, খাতা, পেন্সিল আর স্কুল ব্যাগ নিয়ে পড়ার বেঞ্চ দিয়ে দেয়াল ডেঙ্গিয়ে বিদ্যালয়ের যেতে হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।  এমন চিত্র উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের কান্দারপাড়া গ্রামে অবস্থিত  ১৩ নং চেচিয়াবাধা  সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয়টির এ দুরাবস্থা যেন দেখার কেউ নেই। বার বার বলা সত্তেও কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেননি কতৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়টির আশে পার্শ্বের পুকুর ডোবা ভরাট হয়ে বিদ্যালয় মাঠে হাটুর বেশি পানি জমে আছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই পাশেই অবস্থিত বাজারের ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ঢুকে স্কুল বিদ্যালয়ের মাঠটি সয়লাব হয়ে যায়। প্রায় সারা বছর স্কুলের মাঠে পানি জমে থাকে। স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে পানি পচে নষ্ট হচ্ছে। মশা, মাছি, জোক ও সাপের উপদ্রব বাড়ছে। ফলে পানি বাহিতসহ বিভিন্ন রোগ ব্যধির সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় বাচ্চাদেরকে স্কুলে পাঠান অসম্ভব হয়ে পড়েছ ফলে অভিভাবকরা তাদের কোমলমতি সন্তানদের দুর্ঘটনার ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন। জলাবদ্ধতার কারণে দৈনিক সমাবেশসহ খেলাধুলা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত। কোন ধরণের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারণে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় মাঠের এ বদ্ধ পানি পঁচে দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। এতে একদিকে স্কুলের মাঠে ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করতে পারে না। অন্যদিকে জলাবদ্ধতার কারণে পানি পচে সাপ ও জোঁকের দেখা মেলে খুব সহজেই। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারনে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের কোন ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের  পড়ার বেঞ্চ দিয়ে দেয়াল পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে হয় প্রতিদিন। এসব সমস্যার জন্য শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। বিদ্যালয়টিতে ২২৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই বেশ কিছু শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকছে বিদ্যালয়ের এ পরিবেশের কারণে। বাচ্চারা স্কুলে নিয়ে এলে ক্লাসের ফাঁকে সে মাঠে জমে থাকা পানিতে চলে যেতে চায় খেলা করার জন্য চলে যায়।
বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, পঁচা পানি পার হয়ে স্কুলে  আসতে আসতে পায়ে ঘা হয়ে গেছে। তাই হেড ম্যাডাম পড়ার বেঞ্চ দিয়ে দেয়াল পার হয়ে স্কুলে যাওয়ার  ব্যবস্থা  করে দিয়েছে।
চতুর্থ শ্রেণীর রাজীব বলেন, পানি থাকায় গর্ত না দেখে পা পিছলে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছি। পঁচা পানি দিয়ে যাওয়ার কারনে এলার্জি আর চুলকানি হয়।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষিকা আকলিমা খাতুন বলেন, বিদ্যালয় মাঠে পানি জমে থাকার বিষয়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা, সামান্য বৃষ্টি হলেই বিদ্যালয় মাঠটি পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এবং আশেপাশের পুকুর ডোবা ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যাতায়াতের সমস্যার কারনে আমি, আমার শিক্ষকরা ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়াল ডেঙ্গিয়ে বিদ্যালয়ে আসি। পানির জলাব্ধতার বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। মাঠে মাটি ভরাট করা না এ সমস্যা দূর হবে না। সরকারী বরাদ্দের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হালিম বলেন, । ১৩ নং চেচিয়াবাধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমস্যার বিষয়টি আমরা জেনেছি । আমরা মেরামত-সংস্কারের তালিকায় দিয়েছি।  টাকা আসলে সেই টাকা দিয়ে পরবর্তীতে  কাজ করা দেয়া হবে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page