কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রতিনিধি॥
শরতের শুভ্র কাশফুল আর ঢাকের ধ্বনি এ যেন দেবী দুর্গার আগমনীবার্তা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে প্রতি বছর দেবী দুর্গার আগমন মানেই নতুন বার্তা । শক্তির দেবী দুর্গা। সকল অমজ্ঞলকে দূর করে মজ্ঞলের জন্য দেবীকে আহবান করা হয় মর্তলোকে। আর মাত্র কয়দিন বাকি দুর্গাপূজা কে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার মৃৎশিল্পীরা ।
জানা গেছে, উপজেলার ৭৩ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে। এ উৎসব উপলক্ষে তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার মৃৎশিল্পীরা। এখন চলছে বাঁশ,খড় ও কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি ও প্রলেপ দেওয়ার প্রাথমিক কাজ। কাজের চাপে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও প্রতিমা তৈরিতে সহযোগিতা করছেন। পরম যতেœ কারগিররা দেবীর মুকুট, হাতের বাজু, গলার মালা,শাড়ির নকশা, প্রিন্ট ও ঠাকুরের চুল তৈরি করছেন। এরপর প্রতিমায় দেওয়া হবে রংতুলির আঁচড়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলা সদরের চন্দ্রখানা গ্রামের নাওডাঙ্গা পুলেরপাড় এলাকার প্রতিমা শিল্পী দীনেশ চন্দ্র রায় এবারে পাঁচটি প্রতিমা তৈরীর অর্ডার পেয়েছেন। সেগুলোর কাজও প্রায় শেষ। এখন তিনি পাশের জেলা লালমনিরহাটে যাচ্ছেন প্রতিমা তৈরীর কাজে।
অপরদিকে নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত শিমুলবাড়ীর সর্বজনীন হরি বাসর মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন শ্রমিক সাথে নিয়ে প্রতিমা তৈরী করছেন শিল্পী অমূল্য চন্দ্র বর্মন। এবছর ১৫ টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছেন তিনি।
অমূল্য চন্দ্র বর্মনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সঠিক সময়ে প্রতিমা সরবরাহ করার জন্য চার থেকে পাঁচজন সহযোগী নিয়ে রাত দিন জেগে কঠোর পরিশ্রম করছি। বর্তমানে বাঁশ, রঁশি, খড়, মাটি ও রংয়ের দাম বাড়লেও সে হারে দেবীর প্রতিমার দাম বাড়েনি। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা দরে চুক্তি হয়েছে। সহযোগীদের মজুরি ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে একটি প্রতিমা তৈরি করে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা আয় হবে। এ শিল্প থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।। ওস্তাদ তরণী কান্ত রায়ের কাছ থেকে শিখে প্রতিমা তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্ত্তিক চন্দ্র সরকার ও সাধারণ সম্পাদক ভারত চন্দ্র রায় জানান, এ বছরেও ৭৩ টি পূজা মন্ডপের শারদীয় দুর্গা উৎসব শাস্তির্পূণভাবে পালিত হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে পাঁচদিন ব্যাপী এ উৎসব পালিত হবে। এ বছর দেবী দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে আসবেন, আর যাবেন দোলায় চড়ে।
You cannot copy content of this page