• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন

‘সরকার ঘোষণা দিয়ে কোটার পক্ষের লোকদের মাঠে নামিয়েছে’

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৮

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে দ্বিচারিতা করছে সরকার। সংস্কার চাইলেও কোটা বাতিল করেছে সরকার। অন্যদিকে কোটার পক্ষের লোকদের, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন, যদি কেউ কোটা চায়, তাহলে এখন ‘কোটা চাই’ বলে বাজপথে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখা হবে কী করা যায়।এরপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেওয়া হবে না।’একথা বলে তাদের দিয়ে সড়ক অবরোধ করানো হচ্ছে। কোটা নিয়ে দ্বিচারিতা করে কোনো লাভ হবে না।
আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি যাতে প্রকাশ করা না যায় সেজন্য ডিজিটাল আইন পাস করিয়েছেন। যেভাবেই হোক সরকার এই আইনকে বহাল রাখতে চান।
রিজভী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন প্রতিনিয়ত মামলা হামলার শিকার। কোনো কারণ ছাড়াই কাল্পনিক মামলার বন্যায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে দেশকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘুম হারাম করে দিয়েছে এই সরকার।
রিজভী বলেন, কোনো ওয়ার্ডেই তিনজন নেতাকর্মী একসঙ্গে চলাফেরা করতে পারছেন না। বাসাবাড়ি তছনছ করে চলে চিরুনি তল্লাশি। তুলে নিয়ে যায় কিশোর, তরুণ, ছাত্রদল, যুবদল ও অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের, এমনকি বয়স্ক বিএনপির লোকদেরও। খাল, বিল, নদীর ধারে মাইক্রো থেকে নামিয়ে চলে যেতে বলে, তারপর গুলি করা হয় পেছন থেকে। তা নাহলে কিছুদিনের জন্য, নয়তো চিরদিনের জন্য গুম করে অদৃশ্য করা হচ্ছে।
তিনি জানান, বুধবার জাতীয়তাবাদী দলের উদ্যোগে নিরপেক্ষ সরকারের দাবি, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি সম্বলিত ৭ দফা এবং সুশাসনের অঙ্গীকার সম্বলিত ১২ দফা লক্ষ্যসহ একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসক বরাবরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে হস্তান্তরের কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জে মিছিল পণ্ড, পাইকারি হারে গ্রেফতার এবং আক্রমণে নেতাকর্মীদের আহত করা হয়। বুধবার কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ লাঠি চার্জ করে। এতে ঠাকুগাঁওয়ে ৩০ জন, মুন্সিগঞ্জে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রামে ৭ জন, মুন্সিগঞ্জে ১০ জন এবং ফেনীকে একজন জনকে গ্রেফতার করা হয়।এসবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর সরকারের ক্রোধ, রোষ আর জিঘাংসা কত ভয়ঙ্কর, তা মুফতি হান্নানের ওপর বর্বর নির্যাতনের বর্ণনায় ফুটে উঠেছে। বেআইনি শাসনের পরিসর বৃদ্ধি পাওয়াতেই ন্যায়-অন্যায়ের বিচারবোধ হারিয়ে গেছে আইন-আদালত-প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকদের নিকট থেকে। ফজলুল কবির, কাহার আকন্দ’রা এই দেশ ,এই সমাজেরই লোক, অথচ নিজেদের জাগতিক স্বার্থ পূরণের জন্য নির্দোষ লোকদের ফাঁসাতে জোর করে অন্য একজনের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতার বিবরণ শুনে মানুষ বিমূঢ় হয়ে পড়ে।
রিজভী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতারা ও সরকারের সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ন্যায়বিচার পাবেন কি না, সেটি নিয়ে জনগণের প্রশ্ন এখন দীর্ঘতর হচ্ছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নিজেই বলেছেন, ‘যে দেশে প্রধান বিচারপতিই ন্যায়বিচার পায় না, সেদেশে সাধারণ মানুষ কীভাবে ন্যায়বিচার পাবে?
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page