• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২৬ অপরাহ্ন

সৎ মানুষদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন: রাষ্ট্রপতি

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি একজন নিরপেক্ষ লোক। আমি কাউকে ভোট দেওয়ার কথা বলতে পারি না। তবে আপনারা সেই দলকে ভোট দিবেন, যে দলকে ভোট দিলে দেশের সার্বিক কল্যাণ হবে। যে দল দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপনাদের বুঝে-শুনে কাজ করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,  আপনার ভালো মানুষকে নমিনেশন দিন। যারা লুটপাট করবে, মানুষের সঙ্গে বাহাদুরি দেখাবে, মানুষকে মানুষ বলে মনে করবে না, এ ধরণের লোককে নমিনেশন দেওয়া ঠিক হবে না।
তিনি আরো বলেন, টিআর-কাবিখা যারা বিক্রি করে দিবে তাদের বয়কট করুন। সৎ মানুষ দেখে এবং সুখে-দুখে যে মানুষের পাশে থাকবে তাদের ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করুন।
আজ সোমবার বিকালে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায়  গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে তাকে প্রদত্ত গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
গণ-সংবর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো: জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং জেলা বারের পিপি অ্যডভোকেট শাহ আজিজুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক রাসেল আহমেদ তুহিন। বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট  মো: সোহরাবউদ্দিন এমপি, মো: আফজাল হোসেন এমপি, প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপি, দিলারা বেগম আসমা এমপি,  জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান সাজাহান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটো, সাংগঠকি সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকট ভূপেন্দ্র চন্দ্র ভৌমিক দোলন, জেলা ন্যাপের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক খান রতন,  জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল গণি ঢালী লিমন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মানপত্র পাঠ এবং রাষ্ট্রপতিকে সোনার চাবি উপহার দেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে পুলিশের আইজি, সেনাবাহিনী প্রধান কিংবা কেবিনেট সচিব, সচিব যারা হয়েছেন তারা একটু বড় হয়ে গেলে, নাম-যশ হলে তারা মানুষকে আর মানুষ মনে করেন না। কিন্তু এটা ঠিক না। মানুষকে মানুষ মনে করতে হবে। বিশেষ করে জনপ্রতিনিধিদের মনে রাখতে হবে যে, তারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তাদেরই সমর্থনে। কাজেই জণগণের ওপর আপনি মাতবরি করবেন-  এটা হতে  পারে না।
রাষ্ট্রপতি গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠে এসে কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ’৬১ সালে আমি গুরুদয়াল কলেজে এসে ভর্তি চাই। স্কুল জীবন কাটিয়েছি ভৈরব ও নিকলীতে। এই কলেজের মাঠ থেকেই রাজনীতি শুরু করেছিলাম। কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষ- তারাাই  আমার রাজনীতির বিশ্ববিদ্যালয়। এখানকার বিভিন্ন শ্রমজীবী ও বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে আমি রাজনীতি শিখেছি। তাদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে তখনকার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতাম। আমার মতো একজন সাধারণ মানুষ পরপর দুইবার রাষ্ট্রপতি হয়েছি। এই উপমহাদেশে এরকম নজির আর নেই। এই সম্মান কিশোরগঞ্জবাসীর পাওনা।
চুয়ান্ন বছরের বিবাহিত জীবনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, আমার স্ত্রী আজ এই মঞ্চে আমার পাশে বসে আছেন। ওনাকে আসতে মানা করেছিলাম। কিন্তু তিনিও এই কলেজের ছাত্রী বিধায় তার আব্দার মানতে বাধ্য হয়েছি। তিনি কোনো জনসভায় এই প্রথম মঞ্চে এলেন।
স্থানীয় দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবই আমার জানা। সবগুলোই পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। বছর দুই-তিন বছর আগে কিশোরগঞ্জেই এক অনুষ্ঠানে এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে বলে কথা দিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। এটা আমারই ব্যর্থতা। কেন পারিনি সেটা আমি বলতে চাই না। আমার পরে শুরু করে নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আমি নিয়োগ দিয়েছি। আমি কিশোরগঞ্জ থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দুই-একটি সাইট দেখে যাবো। এরমধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে কমিটি করে দেওয়া হবে। তারা স্থান নির্বাচন করে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ ব্যাপারে কাজ শুরু করার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রপতি একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। সন্ধ্যার পর রাষ্ট্রপতি সার্কিট হাউজে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ