তানোর(রাজশাহী) প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরে মাল্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা থাকায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ পরীক্ষামূলক ভাবে ২৫টি মাল্টার বাগান তৈরী ও মাল্টা চাষ শুরু করেছেন। আর এসব বাগানে ফল আসায় মালিকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকদের মধ্যে প্রতিনিয়ত মাল্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলের উচু জমিতে মালটা চাষে কৃষকরা অধিক লাভবান হবে।
জানা গেছে, বৃহত্তর বরেন্দ্র অঞ্চলের অর্ন্তভুক্ত তানোরের বিভিন্ন এলাকায় উচু নিচু জমিতে ধান বা গম চাষে অধিক পরিমানে সেচের প্রয়োজন হয়। এতে করে কৃষকের খরচ হয় বেশি । আবার সেই তুলনাই কৃষক লাভের মুখ দেখতে পাই কম। এসব দিক বিবেচনা করে তানোরে পরীক্ষামূলক ভাবে মাল্টা চাষের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তানোরের বিভিন্ন এলাকার ২৫ জন কৃষককে সরকারি খরচে এক’শ টি করে মাল্টার চারা, সার ও বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বাগান তৈরি করতে সহযোগীতা করেছেন কৃষি অফিস। এক বছর আগে রাজস্ব’র অর্থায়নে তানোর উপজেলা কৃষি অফিস এই সব মাল্টার বাগান তৈরি করে। এক বছরের মাথায় এই সব বাগানে মাল্টা ফল ধরতে শুরু করেছে এবং প্রতিটি গাছে প্রায় ৪০-৬০ টির মত মাল্টা ধরেছে। আবার কয়েকটি গাছের মাল্টা খাওয়ার উপযোগী হয়েছিল। সেগুলো খেয়ে দেখা গেছে এ অঞ্চলের মাল্টার উৎকৃষ্টমাণের ও সুস্বাদু। এর মধ্যে একটি বাগানের মালিক চান্দুড়িয়ার শামসুজ্জোহা সামু জানান, তিনি এক বছর পূর্বে কৃষি অফিসের সহায়তায় এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে মাল্টার বাগান তৈরি করেন। ইতি মধ্যে তার বাগানের গাছে মাল্টায় ভরে গেছে । এতে তিনি অনেক আনন্দিত হয়েছেন। তিনি বলেন, মাল্টা বাগান তৈরিতে ব্যায় এবং সেচ কম লাগে । আবার এই অঞ্চলে উৎপন্ন মাল্টার গুনগত মান ভাল খুব সুস্বাদু। সামু আরো বলেন, মাল্টা উৎকৃষ্ট মানের ফল হওয়ার এর দাম অনেক। যা আমরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হতে পারব। তাই আমি মাল্টা চাষে আগ্রহী । আগামীতে আরো কয়েকটি মাল্টার বাগান তৈরি করবো বলে পরিকল্পনা রয়েছে। তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, মাল্টায় বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফোটাতে পারে । এই অঞ্চলের কৃষকের জন্য মাল্টা সুখের বার্তা বয়ে নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে নিচের পানির স্তর অনেক নীচু। আর ধান বা গমের মত ফসল ফলাতে পানি সেচ দিতে হয় অনেক বেশি । এতে করে কৃষকের খরচ পড়ে অনেক বেশী । আবার লাভও কম হয়। তাই এই সব অঞ্চলে সেচ কম লাগে এমন ফলের বাগান তৈরি করায় ভালো।এসব ভেবে আমরা মাল্টা চাষে মনোযোগ দিয়ে কৃষকদের বাগান তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করি। এতে করে দেখা যায়,এ সব অঞ্চলের উচু জমিতে মাল্টা চাষের উপযোগী। এবং এগুলোর গুনগত মানও খুব ভালো । তিনি বলেন, মাল্টা চাষে কৃষকরা অনেক লাভবান হবে। তিনি আরো বলেন,একটি মাল্টার গাছ ১২-১৫ বছর পর্যাপ্ত পরিমানে ফল দেবে । আর মাল্টা দামী ফল হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।
You cannot copy content of this page