• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪২ অপরাহ্ন

তফসিল ঘোষণার জন্য ইসির প্রস্তুতি শেষ

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তফসিল ঘোষণা করবে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যর কমিশন। তার আগে ৩১ অক্টোবর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইসি। নভেম্বরের ২ ও ৩ তারিখ সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় ৪ থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিজয় দিবসের উত্সবের পরপরই ১৮ থেকে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোন দিন ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ হতে পারে। তবে বিষয়টি নির্ভর করছে সার্বিক পরিস্থিতির উপর। ইসি সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ইত্তেফাককে বলেন, আগামী ১ নভেম্বর বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময়সূচি সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। এই সাক্ষাত্ শেষে কমিশন সভা ডেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আগামী ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী দশম সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি দশম সংসদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসাবে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারির আগের  ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। ওই ৯০ দিনের শুরু হচ্ছে আগামী ৩০ অক্টোবর।
আগামী নির্বাচনের ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্রের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা ৮ নভেম্বরের মধ্যে প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণের ২৫ দিন আগে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়াও ইতোমধ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সাথে ইসি সচিবালয়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাত্সরিক পরীক্ষার সময়সূচি নিয়েও আলাপ হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রণালয় ইসি সচিবালয়কে জানিয়ে দিয়েছে আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বরের আগেই সব পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও এ সময়ের  মধ্যে সব পরীক্ষা শেষ করার  নির্দেশনা পেয়ে গেছে। সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোই ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে।  প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আব্দুল ওয়াহেদ স্বাক্ষরিত এক সার্কুলারে  ২৯ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগে এ সময় ছিল ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
পোলিং এজেন্টদের
প্রশিক্ষণ দিতে চায় ইসি
দলগুলো সম্মত হলে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের আগে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, এতে পোলিং এজেন্টরা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে আরও সচেতন হবে। দলে নির্বাচনে দায়িত্ব পালন আরও সহজ হবে। তাদের কী কী কাজ, কী দরকার জানা থাকলে নির্বাচন পরিচালনা সুবিধা হবে। গতকাল রবিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি এ কথা বলেন।
ভোটারদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, ভোট করতে রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে ফেলতে হবে। রাজনৈতিক দলের কথায় নয় বরং ভোটারের স্বার্থরক্ষা করে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সে জন্য কাজ করতে নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন তিনি।
সিইসি বলেন, নির্বাচনে বুথ বসানো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধ থাকে। এর কিছু কিছু যৌক্তিক। তবে আমাদের রাজনৈতিক দলের কথায় নয় বরং ভোটারের স্বার্থরক্ষা করে কাজ করতে হবে। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রদর্শনের পর ইতিবাচক মূল্যায়ন পাওয়া গেছে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, আগের ব্যবস্থা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। ব্যালট বাক্স রাত থেকে পাহারা দিতে হয়। ইভিএমে লাগে না। বরং ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফল দিনের মধ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রকাশ করা যায়।
সিইসি বলেন, এবার ৪০ হাজারেরও বেশি কেন্দ্রে দুই লাখেরও বেশি ভোটকক্ষ থাকবে। সে ক্ষেত্রে অন্তত ১০ লাখের মতো পোলিং এজেন্ট থাকতে পারে। কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ, ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক প্রমুখ।
প্রচারে জীবন্ত প্রাণী
ব্যবহার করা যাবে না
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে জীবন্ত কোনো প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। এই বিধান যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের আচরণ বিধিমালার সংশোধনী অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রবিবার বিকালে ইসির সভায় এই সংশোধনী অনুমোদন করা হয়। সভা শেষে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রচারে জীবন্ত প্রাণীর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বাইরে পোস্টারের সংজ্ঞা থেকে ‘কাপড়’ বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাত্ নির্বাচনে কেউ কাপড়ের তৈরি পোস্টার ব্যবহার করতে পারবে না। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে বৈঠকে বলা হয়, এটি আরও পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে চূড়ান্ত করা হবে।
ইসি সূত্র জানায়, তফসিলের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের থাকা এবং সভার অনুমতি সংক্রান্ত ধারায় সংশোধনী আনার প্রস্তাব থাকলেও গতকাল কমিশনের সভায় এ দুটি বিষয় ওঠেনি। ফলে বড় কোনো পরিবর্তন আসেনি আচরণ বিধিমালায়।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page