• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী সিদ্ধান্ত নেবে আজ

আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

আওয়ামী লীগের এক যৌথসভা আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সংসদীয় দলের (দলীয় সকল এমপি) সদস্যরা এতে উপস্থিত থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা দলীয় নেতা ও সংসদ সদস্যদের দিকনির্দেশনা দেবেন। দায়িত্বশীল নেতাদের নির্বাচনী গাইডলাইনও দেবেন তিনি।
একই সঙ্গে বৈঠকে রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠ দখল রাখার কৌশল, ইশতেহার চূড়ান্ত করা, জোট সম্প্রসারণ হবে কিনা, জোটের শরিকদের কত আসন দেওয়া হবে, নির্বাচনী বাজেট, সারাদেশে ভোট কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি অনুমোদন, দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-কোন্দল সৃষ্টিকারীদের শাস্তি নির্ধারণ, বিভাগীয় নির্বাচন পরিচালনা ও বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন এবং নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বিষয় নিয়েই আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে এই সভাতেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, আজ দলের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কী কী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার, একাদশ নির্বাচনে আমাদের ইশতেহার চূড়ান্ত করা, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি, নির্বাচনী প্রচারণাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।’ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনের আগে এমন একটি বৈঠক দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ বৈঠকে দলীয় প্রধান তাদের নির্বাচনী বার্তা দেবেন। তিনি তার বক্তব্যে টানা দুই মেয়াদে সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়নচিত্রও তুলে ধরবেন। সবাইকে নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে নৌকা মার্কার পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানাবেন। আগামী নির্বাচন যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হবে এটি মাথায় রেখেই সব ভেদাভেদ ভুলে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সবাইকে মাঠে নামতে বলবেন তিনি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জোটগতভাবে অংশ নেবে এবং এ কারণে অনেককে মনোনয়নবঞ্চিত হতে হবে বলেও বৈঠকে আভাস দিতে পারেন। মনোনয়ন না পেলে যেন দলে বিরূপ প্রভাব না পড়ে, এ জন্য বর্তমান এমপিদের বার্তা দেওয়া হবে।  জানা গেছে, রাজনৈতিক মাঠে ড. কামালের নেতৃত্বে বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল মিলে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানানো হলেও তাদের কর্মসূচি ও গতিবিধির ওপর তীক্ষ নজর রাখছে আওয়ামী লীগ। সরকারবিরোধী জোটকে চাপে রেখে একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত রাজনীতির মাঠ নিজেদের দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। দলটির নেতারা বলছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নামে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট আসলে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় না। তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এ জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। তাদের সাত দফাই হলো সাতটি ষড়যন্ত্র।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, ঐক্যফ্রন্ট শুরু থেকেই তৃণমূলে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। সিলেটের সমাবেশও সিলেটের জনগণের মধ্যে কোনো প্রভাব ফেলেনি। এই সমাবেশে যারা যোগ দিয়েছেন, তাদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। আওয়ামী লীগ নেতারা আরো বলেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ তাদের সাম্প্রদায়িক দোসররা রাজনৈতিক অঙ্গনে নাশকতা ও সহিংসতার ছক আঁকছে। তফসিল ঘোষণার পর বিভাগীয় শহরগুলোতে নির্বাচনী সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে আজকের যৌথ সভায়। গতকালও চুয়াডাঙ্গায় ১৪ দলের গণসমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত এ সমাবেশে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আলাদা। কারণ, এবার ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির যৌথ নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াকে মোকাবিলা করতে হবে। তবে এ উদ্যোগ রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিলেও সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারার পিছুটান ঐক্যকে অনেকটা দুর্বল করে দিয়েছে। নেতারা জানান, যৌথ সভায় দলের নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো বিষয়েও আলোচনা হবে যৌথ সভায়। এর আগে, একাধিক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভার আকার ছোট হবে। তবে গত ২২ অক্টোবর সৌদি আরব সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার আকার ছোট না করার ইঙ্গিত দেন।
পরে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে জানান, মন্ত্রিসভা ছোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই বরং নতুন দুয়েকজন যোগও হতে পারে। এ বিষয়টিও দলের যৌথ সভায় চূড়ান্ত করা হবে বলেও তিনি জানান।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থী মনোনয়ন অনেকটাই চূড়ান্ত করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। অন্তত ১৮০টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে দলের বিভিন্ন সূত্র থেকে। গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত দলটির নির্বাচন পরিচালনা জাতীয় কমিটির বৈঠকে কমিটির চেয়ারম্যান, দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। আজ যৌথ সভায় এ বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ