• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন

ডাকাতির টাকা ও মুঠোফোন ফেরৎ দিলেন ওয়াতির মেম্বার

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৮

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি॥

কমলগঞ্জে দিনে-দুপুরে ডাকাতির টাকা ও মুঠোফোন মালিককে ফিরিয়ে দিয়েছেন ওয়াতির মেম্বার। এ ডাকাতির টাকা ও মুঠোফান ওয়াতির মেম্বার কর্তৃক মালিককে ফিরিয়ে দেয়ার মুহুর্তের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় সর্বত্র চলছে আলোচনা সমালোচনা। উদ্ভব হয়েছে নানা প্রশ্নের। লোকজন বলাবলি করছেন- ডাকাতির টাকা ও মুঠোফোন মালিককে ফিরিয়ে দেয়া প্রশংসাজনক। কিন্তু, ডাকাতদেরকে পুলিশে দিলেননা কেন ? তার এ ভূমিকা প্রমান করে ডাকাতদের সাথে তার যোগসাজস রয়েছে এবং মূলত ডাকাতদেরকে বাচাতেই তিনি এটা করেছেন। সচেতন মহলের দাবী- ওই ডাকাতদের পরিচয় প্রকাশ এবং তাদেরকে আইনের আওতায় তুলে দেয়া হোক।
দিনে-দুপুরে ডাকাতির এ ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউনিয়নস্থিত দেওড়াছড়া চা বাগানের ৭নং সেকশন এলাকায় গত ১৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে।
দিনে-দুপুরে ডাকাতির শিকার ভ্রাম্যমান প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ডাকাতদের কাউকে চিনতে না পরলেও, তার দেয়া ডাকাতদের দৈহিক বিবরণ থেকে রামচন্দ্রপুর গ্রামের মনাই মিয়ার প্রবাস ফেরত পুত্র ফারুক মিয়াকে শনাক্ত করা গেছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে- এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভ্রাম্যমান প্লাষ্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম মালামাল বিক্রির জন্য যাবার পথে দেওড়াছড়া চা বাগানের ৭নং সেকশন এলাকায় পৌছলে ৪ যুবক তাকে আটকিয়ে গলায় কাচি ধরে তার সাথে থাকা নগদ ৪ হাজার ৩শ ৮৫ টাকা ও মোবাইল ফোন ডাকাতি করে নিয়ে যায়।
ডাকাতরা চলে যাবার পর শফিকুল ইসলাম চা শ্রমিকদের সহায়তায় দেওরাছড়া চা বাগানযুক্ত ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ধনা বাউরীর নিকট বিচারপ্রার্থী হলে, ধনা বাউরী তাকে ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার বুলবুল আহমদ ওয়াতিরের নিকট পাঠান। পরে শফিকুল ইসলাম রামচন্দ্রপুর গ্রামে গিয়ে ইউপি মেম্বার বুলবুল আহমদ ওয়াতিরের সাথে দেখা করে ডাকাতি ঘটনার বিচারপ্রার্থী হন। এসময় ওয়াতির মেম্বার অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে ফোন করে ডাকাতির মালামালগুলো নিয়ে আসতে বলেন। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে এক ব্যক্তি সেখানে এসে ৪ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন ওয়াতির মেম্বারকে দিলে তিনি তা শফিকুল ইসলামের হাতে তুলে দেন। এসময় রামচন্দ্রপুর গ্রামের মাওঃ আব্দুল কাইয়ুমের পুত্র হোসেন আহমদ টাকা ও মোবাইল ফোন হস্তান্তরের দৃশ্যটি মোবাইল ফোনের ক্যামেরাবন্দি করেন এবং তার ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। উদ্ভব হয়েছে নানা প্রশ্নের। ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষকরে রামচন্দ্রপুর গ্রামে ওয়াতির মেম্বারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মন্তব্য- ওই ডাকাতরা ওয়াতির মেম্বারের আত্বীয় অথবা তার কট্টর সমর্থক ভোটার হবার কারণেই তিনি তাদেরকে আইনের আওতায় তুলে দেননি এমনকি পরিচয়ও প্রকাশ করেননি। মূলত ডাকাতদেরকে বাচাতেই তিনি এটা করেছেন। সচেতন মহলের দাবী- ওই ডাকাতদের পরিচয় প্রকাশ এবং তাদেরকে আইনের আওতায় তুলে দেয়া হোক।
দিনে-দুপুরে ডাকাতির শিকার ভ্রাম্যমান প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন- ঘটনার পর আমি চা শ্রমিকদের সহায়তায় ধনা বাউড়ীর কাছে বিচারপ্রার্থী হলে, তিনি আমাকে ওয়াতির মেম্বারের নিকট পাঠান। পরে রামচন্দ্রপুর গ্রামে গিয়ে ওয়াতির মেম্বারের নিকট বিচারপ্রার্থী হলে, তিনি আমার কাছ থেকে কিছু দূরত্বে গিয়ে কাকে যেন ফোন করে মালামাল নিয়ে আসতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর দুপুর দেড়টার দিকে একব্যক্তি এসে টাকা ও মোবাইল ফোন মেম্বারের হাতে দিলে, তিনি তা আমাকে দেন। এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন- আমি ডাকাতদের কাউকে চিনতে পারিনি। তবে, মেম্বার সাহেব ডাকাতদেরকে চিনেন।
এব্যপারে ধনা বাউরী মেম্বার বলেন- ভ্রাম্যমান প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম ডাকাতদের হাতে সর্বস্ব হারিয়ে চা শ্রমিকদের সহায়তায় আমার কাছে আসলে আমি তাকে ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার বুলবুল আহমদ ওয়াতিরের নিকট পাঠিয়ে দেই। পরে কি হয়েছে তা আমি জানতে পারিনি।
এব্যপারে জানতে চাইলে ওয়াতির মেম্বার বলেন- আমি ব্যস্ত আছি। রাত ১০টার পর ফোন দিন। একইভাবে ১নং রহিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমদ বদরুলও বলেন- এখন একটু ব্যস্ত আছি। পরে কথা বললে হবে কি ? রাত ১০টার পর ফোন দিন।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page