• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:৫১ অপরাহ্ন

খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না: ফখরুল

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের সাত দফা দাবি পুরোটাই মেনে নিতে হবে। সবার আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। একইসঙ্গে অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। সবার আগে শর্ত হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। তার মুক্তি না হলে কোনও নির্বাচনই অর্থবহ হবে না। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে কোনও সংলাপ বা নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা মানববন্ধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূইয়া, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ। বেলা ১১ টা থেকে মানববন্ধন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলেও সকাল ১০ টা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। মানববন্ধনের পাশে জলকামান, এপিসি ও প্রিজন ভ্যান নিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থানে ছিল। ফলে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছিল মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে। মানববন্ধনের শুরুতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও সাড়ে ১১টা থেকে নেতাকর্মীরা কর্মসূচিস্থল ত্যাগ করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে কর্মসূচিস্থল প্রায় কর্মীশূন্য হয়ে পড়ে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগে মানববন্ধন শেষ হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়াকে সুপরিকল্পিতভাবে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। এমনকি তিনি জামিন পেলেও তাকে জামিন দেওয়া হয়নি। একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। একদিকে সরকার সংলাপের প্রস্তাব পাঠিয়েছে, অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানো হয়েছে। এই দুইটা সাংঘর্ষিক। এতে কোনও গণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিফলন ঘটে না এবং সংলাপের যে আন্তরিকতা তা প্রমাণ করে না। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে বিচার ব্যবস্থা সরকারের আয়ত্তে চলে গেছে। গণতান্ত্রিক অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বলছি, গণতন্ত্রের দিকে ফিরে আসুন এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করুন। নির্বাচন দিচ্ছেন, কিন্তু সেই নির্বাচনে আপনারা হেলিকপ্টারে করে জনগণের কাছে যাচ্ছেন আর আমাদের নেত্রী কারাগারে এবং আমরা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমাদের কর্মীরা কোথাও দাঁড়াতে পারেন না। এই অবস্থায় কখনও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হতে পারে না।
বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সরকার করায়ত্বে নিয়ে গেছে দাবি করে ফখরুল বলেন, সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহা বলে গেছেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে সরকারের করায়ত্বে। এখানে বিচার বিভাগের কোনও স্বাধীনতা নেই। এজন্য তাকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে এই সময়ে শুধু একটিমাত্র কারণে কারাবরণ করতে হচ্ছে, তা হলো মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার না করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল। মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে একটু দূরে থাকা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা মাথা নেড়ে সম্মতিসূচক ইশারা করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়বে এটা আমরা কখনও আশা করিনি। এটা নজিরবিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, আগামীতে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেখানে খালেদা জিয়া, বিএনপিসহ বিরোধীদলকে বাইরে রাখা। ২০১৪ সালে খালেদা জিয়া ও ২০ দলীয় জোট বয়কট করেছিল বলে সেই নির্বাচন অর্থবহ হয়নি। বিএনপি ও বিরোধী দল ছাড়া আগামীতে কোনও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। দেশের মানুষ হতে দেবে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে মোশাররফ বলেন,আমারা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। তা না হলে দেশে যে অরাজকতা ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে তার দায় সরকারকে নিতে হবে।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page