• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫০ অপরাহ্ন

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন করে

আপডেটঃ : শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আবারো নৌকায় ভোট চেয়ে বলেছেন, নিজেদের এলাকার প্রকল্পগুলো বুঝে নিন, ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্প উপহার দিলাম। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ময়মনসিংহে আলাদা শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় স্টেডিয়াম ও নভোথিয়েটার করার ঘোষণাও দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মানুষ মারে, নির্যাতন করে, আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে কোনো নির্যাতন করে না, দেশের উন্নয়ন করে।
গতকাল শুক্রবার বিকালে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তার আগে ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়নে ১৯৫টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে ও ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, সাবেক এমপি আবদুস সাত্তার, অসীম কুমার উকিল, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মির্জা আযম, আওয়ামী লীগের শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস  সাত্তার, মারুফা আক্তার পপি, মোসলেম উদ্দিন এমপি, শরীফ আহমেদ এমপি, নাজিম উদ্দিন আহমেদ এমপি, আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন এমপি, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি, জুয়েল আরেং এমপি, ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু প্রমুখ। এসময় নবগঠিত সিটি করপোরেশনের পক্ষে প্রশাসক ইকরামুল হক টিটু প্রধানমন্ত্রীকে সিটি করপোরেশনের চাবি হস্তান্তর করেন।
জাতির জনককে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার কথা স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ তার আপনজনকে হত্যার বিচার চাইতে পারে, আমাদের সেই বিচার চাওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করতে চেয়েছিল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা  হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে। এই ময়মনসিংহে তারা পাকিস্তানি বাহিনীর মতো অত্যাচার করেছিল।
দেশ ও জনগণের উন্নয়নে সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি চাই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন হবে। এদের মানুষ দু’বেলা পেট পুরে ভাত খাবে। কেউ গৃহহারা থাকবে না, সবার উন্নয়ন হবে। এসময় তিনি দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উত্সর্গ করেছেন জানিয়ে কবির ভাষায় বলেন, ‘নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি দেবার কিছু নাই/ আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই’।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ২০০১ সালে ষড়যন্ত্র করে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া হলো না। সেসময় ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করে। আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমান ও জালাল উদ্দিনসহ অনেককে গ্রেফতার করে অত্যাচার করেছে। এই এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, গণধর্ষণ করেছে, ৭১’র পাক হানাদারদের মতো। বসতবাড়ি দখল করে ওই গফরগাঁওয়ে রাতারাতি পুকুর করা হয়েছিল।
আওয়ামী লীগ সরকার প্রযুক্তিখাতে দেশকে এগিয়ে নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল। প্রতি উপজেলায় ব্রডব্যান্ড এবং ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছি। আমরা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উেক্ষপণ করে মহাকাশ জয় করেছি। আমরা যে ডিজিটাল সেন্টার করে দিয়েছি, আপনারা সেখানে বসে নিজেরা অর্থ উপার্জন করতে পারেন। নিজের দেশে বসে বিদেশে অর্থ উপার্জন করতে পারেন, সেই সুযোগ করে দিয়েছি। আজ সবার হাতে হাতে মোবাইল। এটি বিএনপির সময় ছিল না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সবার হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।
সমাজের সব গোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা দিচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সম্মানী ভাতা দিচ্ছি। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতার ব্যবস্থা করেছি। সমাজে কেউ বাদ থাকবে না, সবার উন্নয়ন হবে এই চিন্তা থেকেই রাষ্ট্র পরিচালনা করি। আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। এটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি আপনারা নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়ার নেই। আমি চাই কেবল বাংলার মানুষ যেন দু’বেলা ভাত পেট পুরে খেতে পারে। একটা মানুষও যেন গৃহহারা না থাকে। সেজন্য আমাদের গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্প আছে।
প্রধানমন্ত্রী ব্রহ্মপুত্র নদের অপর পাড়ে ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় অবস্থিত ৮টি মৌজায় ৪ হাজার ৩৬৬ দশমিক ৮৮ একর জমির উপর আধুনিক, পরিকল্পিত বিভাগীয় শহর ও সদর দপ্তর,  ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তিনটি নান্দনিক সেতু, দাপ্তরিক, আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা, বিনোদন ইত্যাদি ব্লক, একটি প্রাকৃতিক লেক, আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, মিউজিয়াম, হোটেল-মোটেলসহ নান্দনিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী ৪০ মিনিটের বক্তব্যের মধ্যে প্রায় ৩০ মিনিট ময়মনসিংহ বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ