• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৪:১১ অপরাহ্ন

মনোহরদীর নোয়াকান্দী গ্রামে অগ্নিকান্ডে অসহায় পরিবারটি সম্বলহীন

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৮

মাহবুবুর রহমান, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধিঃ

মনোহরদী উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়নের নোয়াকান্দী গ্রামের পূর্বপাড়ায় গতকাল রাত আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটে  মৃতঃ আবদুল বাতেনের বাড়ীতে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডে দগ্ধহয়ে দুটি গরু ও দুটি ছাগল মারা যায়। ১৬ হাতের চৌচালা টিনসেড ঘরটি সম্পূর্ন ভস্মীভূত হয়ে যায়।  অগ্নিকান্ডের সুত্রপাত কোত্থেকে  কিভাবে হয়েছে তা কেউই সঠিকভাবে বলতে পারছেননা।

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার হতে জানা যায় – দুবছর আগে পরিবারের কর্তা আব্দুল  বাতেন মৃত্যুবরণ করলে তার তিনজন মেয়েকে নিয়ে অসহায় পরিবারের হাল ধরেন সাহেরা বেগম। পরিবারটি পুরুষশুন্য থাকায় মুল অবলম্বন হলো গাভীর দুধ বিক্রি ও মানুষের বাড়ীতে কাজ করে কোন রকমে সংসার চলে তাদের। এর মধ্যে গাভী সহ তিনটি গরু ও দুটি ছাগল হলো সম্বল। বড় মেয়ের বিয়ের পর দুই মেয়েকে নিয়ে কোন রকমে সংসার  চলছে তাদের।

গতকাল বৃহস্পতি বার রাত আনুমানিক ১২:৩০ এ হঠাৎ বাহিরে গরু ছাগলের চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দরজার জানালার ফাঁক দিয়ে বাহিরে আগুন  দেখা যায়। ঘর থেকে বাহিরে এসে দেখেন গরুর ঘরটিতে আগুন ধাউধাউ করে জ্বলছে। এ অবস্থায় হতভম্ব হয়ে আর্ত চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী ছুটে এসে আগুনের প্রচন্ড তাপে এগুতে না পেরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে মনোহরদী হতে ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আগুন নেভানো হয়। ঘরটি তালাবদ্ধ থাকায় ও আগ্নিতাপে লোকজন কাছে যেতে না পাড়ায় দগ্ধ হয়ে ঘরে থাকা তিনটি গরুর মধ্যে দুটি গরু ও দুটি ছাগল সম্পূর্ন পুড়ে মারা যায় এবং একটি গাভী আহত অবস্থায় বাচানো সম্ভব হয়।

ঘরের পূর্বকোণে একটু টিনের ফাকা ছিল এবং চাটাই দিয়ে ঢাকা ছিল ঐ দিক হতেই প্রথমে আগুনের সুত্রপাত হয় বলে জানায় পরিবারটি। তবে ঘরে কোন মশার কয়েল, বৈদ্যুতিক সংযোগ বা আগুন না থাকা সত্বেও কিভাবে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে তা সঠিকভাবে বলতে পারেননি। আগুনে পুড়ে চৌচালা টিনশেড ঘরটি সহ প্রায় দুলক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় এই অসহায় পরিবারটির। কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অসহায় এই মহিলাটি। বারবার এ কথাই বলতে থাকেন আমি এখন এই মেয়েদুটো নিয়ে কিভাবে সংসার চালাবো।

এলাকাবাসী বলেন মধ্যরাতে মৃত বাতেনের স্ত্রী সাহেরা ও মেয়েদের চিৎকার ও ডাকাডাকিতে এসে দেখা যায় তাদের গোয়ালঘরে আগুন  জ্বলছে। পরে আমরা  দুরথেকে পানি দিতে থাকি এবং ফায়ার সার্ভিসে খবর দেই। আগুনের  সুত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে কোন জবাব দিতে পারেনি কেউ। তবে ঘরে যেহেতু কোন আগুন ছিলোনা তাই বাহির হতেই আগুন দেয়া হতে পারে বলেই ধারণা করে নিচ্ছেন অনেকে। গোপন সংবাদে পাওয়া যায় আট মাস আগে টিভি দেখার সময় হঠাৎ ডিস চলে গেলে বাহিরে এসে দেখেন ডিসের লাইনটি কেউ কেটে ফেলেছে। এলাকার সকলেই অসহায় এই পরিবারের এমন ক্ষতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন।

স্থানীয় চেয়ারম্যান ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেন এবং বলেন কিভাবে এই অগ্নিকান্ড ঘটেছে তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন। এমন অসহায় পরিবারের ক্ষতিতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি এও বলেন মহিলাটি সৎ থেকে অনেক কষ্ঠকরে এই সংসারটি চালিয়ে যাচ্ছেন দুধ বিক্রি ও মানুষের বাড়ীতে কাজ করে। এলাকায় কারো সাথে এই মহিলার কোন শত্রুতা আছে এমন কিছু তিনি অবগত নন। ঘটনাটি নিয়ে মনোহরদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করার প্রস্তুতি চলছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page