• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার চরম ভোগান্তি দেখার কেউ নেই

আপডেটঃ : শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৮

সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি॥
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার চরম ভোগান্তি দেখার কেউ নেই। বেশির ভাগ ডাক্তাররা ব্যাস্ত থাকেন নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রাইভেট ক্লিনিকে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের চিত্র দেখলে তা অনুধাবন করা যায়, রোগীদের উপস্থিতি কমতে শুরু করেছে। পূর্বের সিভিল সার্জন ডাঃ উৎপল কুমার দেবনাথ তার বিভিন্ন অসচেতনতায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের যে চিত্র রেখে গিয়েছিলেন এবং বর্তমান সিভিল সার্জন ডাঃ তৈহিদুজ্জামান নতুন দ্বায়িত্ব গ্রহন করলেও হাসপাতালের চিত্র আরও নাজুক বলে দাবি করেন সচেতন মহল। কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি, কমেনি কোন দূর্ণীতি। এখন পূর্বের ন্যায় রোগীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না। স্বল্প সংখ্যক রোগীর উপস্থিতি থাকলেও তারা ঠিকমত সেবা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক ব্যক্তি। সূত্র জানায়, এই হাসপাতালের অধিকাংশ ডাক্তারই ব্যাস্ত থাকে খোশ গল্পে, চায়ের আড্ডায় এবং ব্যাক্তিগত ক্লিনিকে । ভূক্তভোগী রোগীরা জানান, চিকিৎসা সেবা নিতে এসে কোন ডাক্তার কে পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে এ এক মৃত্যুযন্ত্রনা সইতে হয় ভুক্তভোগী রোগীদের। নাম বলতে অনিচ্ছুক  হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় একটি গোপন কক্ষে ব্যাস্ত থাকেন বেশিরভাগ ডাক্তাররা বিভিন্ন আড্ডায়। সেসব ডাক্তাররা হলেন  ডাঃ আরিফ, ডাঃ ফয়সাল আহম্মেদ, ডাঃ দেলোয়ার, ডাঃ নারায়ণ প্রসাদ স্যান্যাল, ডাঃ শামসুর রহমান, ডাঃ নাসরিন আক্তার, ডাঃ নাজমুনাহার বুগলী, ডাঃ হাসানুজ্জামান, ডাঃ শরিফুল, ডাঃ ডিনা এবং জুনিয়ার ডাক্তারগণ। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে জরুরী বিভাগের সেবাহীনতার কথা প্রকাশ করলেন কয়েকজন ব্যক্তি। জরুরী বিভাগে সেবা নিতে গেলে টাকা না পেলে রোগীর গায়ে কেউ হাত দেননা বলে অভিযোগ উঠেছে। গজ, ব্যান্ডেজ, সেলাই সুতা এবং জরুরী ভিত্তিতে বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হয়, পরবর্তীতে স্টাফদের কাছে টাকা দিলে সবকিছুই স্টোর থেকে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে জরুরী বিভাগের কর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, জরুরী বিভাগে সরবরাহ থাকে না। যদিও মানহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগীদের ভিড়। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের বাজারে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে পথে বসেছে অসংখ্য পরিবার। ভুল চিকিৎসায় প্রতিমাসে মারা যাচ্ছে একাধিক রোগী। আর এ গুলোর কোন তদন্ত পূর্বক বিচার হচ্ছে না। জেলার চিকিৎসা সেবার এই বেহাল দশার পেছনে কয়েক জন জনপ্রতিনিধি, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ও কতিপয় নামধারী কিছু হলুদ সাংবাদিকদের দুর্নীতিগ্রস্থ ও স্বাস্থ্য সেবা প্রশাসনের নিকট থেকে নেওয়া মাসোহারা ও অনৈতিক সুবিধায় দ্বায়ী বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এদিকে শীতকালীন সময় হিসাবে হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময় সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২:৩০ টা পর্যন্ত চলার কথা। কিন্তু ১/২ জন চিকিৎসক ছাড়া ১০টা ১১টার আগে কোন চিকিৎসক হাসপাতালে আসেন না। যদিও ১১ টার দিকে হাসপাতালে আসেন তাও অল্প সংখ্যক রোগী দেখে বেরিয়ে যান “টি-ব্রেকে”। তারপর আসেন একঘন্টা পরে। এদিকে ঘড়ির কাটা ২ টার ঘরে পৌছানো মাত্রই বেরিয়ে যান চিকিৎসকরা তাদের প্রাইভেট কিøনিকে। সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা তড়িঘড়ি করে রোগী দেখেন বলে জানিয়েছেন, কিছু সংখ্যক ভুক্তভোগী রোগীরা। যে কয়টি রোগী দেখলেও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সুলতানপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মামুন, ছকিনা খাতুন সহ একাধিক ব্যক্তিরা জানান, রুগী থাকলে ও ২টা বাজার সাথে সাথেই চিকিৎসকদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যে কারণে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষগুলো চিকিৎসকদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ