• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৮ অপরাহ্ন

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি- জোট। গতকাল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিএনপি নেতারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও কথা বলেন। আজ রবিবার বা আগামীকাল দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ করে তার মতামত গ্রহণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে।
আজ রবিবার তফসিল পেছানো ও জোটগতভাবে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে চিঠি দেয়া হবে। সে চিঠিতে বলা হবে: ‘যদি আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, সে ক্ষেত্রে আমাদের অনেকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন। আবার অনেকে জোটগতভাবে নির্বাচন করবেন। নিবন্ধিত দলগুলোর হবে নিজ দলের। আর অনিবন্ধিত দলগুলোর প্রতীক হবে বিএনপির প্রতীক। তবে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী গতকাল বৈঠকে তাদের সিদ্ধান্ত জানায়নি। তারা একদিন সময় নিয়েছে বিএনপির কাছ থেকে। তারা বলেছেন,আমরা জোটগত না স্বতন্ত্র নির্বাচন করবো তা আজ-কালের মধ্যে জানাবো। নির্বাচনে শরিকদের মধ্যে আসন বন্টনের বিষয়ে সমন্বয়কারী করা হয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে।
এদিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে দুই-একজন আপত্তি জানান। তারা বলেন, পরিস্থিতি আরেকটু পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরে ২০ দলীয় নেতাদের বৈঠকে ভোটে যাওয়ার বিষয়ে জোটের নেতাদের কাছে মতামত জানতে চায় বিএনপি। এ বিষয়ে অধিকাংশ জোট নেতা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে তাদের মতামত তুলে ধরেন। শরিক দলের কয়েকজন নেতা নির্বাচন বয়কট করে কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নামার ঘোষণা দেয়ার পরামর্শ দেন।
বৈঠক শেষে জোটের শরিক এলডিপির সভাপতি কর্নেল অব.অলি আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে যাব কি যাব না, এ ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি। আগামী দুই দিনের মধ্যে ২০দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জাতির সামনে উপস্থাপন করবে বিএনপি। অলি আহমদ বলেন, আমরা নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি। সরকার কথা দিয়েছিল সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করবে। আমরা মনে করি না যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়েছে। আমরা দেখছি, প্রতিনিয়ত বিশেষ করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করা হচ্ছে, রাস্তাঘাটে তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে, এসব বন্ধ না করা পর্যন্ত সুস্পষ্টভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত আমরা জানাব না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তাহলে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে আসবে। এখনো পর্যন্ত সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। এটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, অনেকে আমাকে প্রশ্ন করেছে, আজ রবিবারের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আমরা ইসিকে লিখিতভাবে বলব, যদি আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, সে ক্ষেত্রে অনেকে আমরা নিজস্ব দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণ করব, অনেকে ২০দলীয় জোটের শীর্ষ দল বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। অলি আহমদ আরও বলেন, ২০ দলীয় জোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে, শুধু ২০ দলীয় জোট নয়, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কথা বলে মতামত নিয়ে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জাতিকে জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে অলি আহমদ বলেন,যদি নির্বাচন যাই তবে আমি আমার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন কবর।
সন্ধ্যা ৬ টায় অলি আহমদের সভাপতিত্বে ২০ দলের বৈঠকে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতের মাওলানা আবদুল হালিম, বিজেপি আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক, আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, জাগপার তাসমিয়া প্রধান, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান, মুসলিম লীগের এএইচএম কামরুজ্জামান খান, পিপলস লীগের গরীবে নেওয়াজ, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা নুর হোসেইন কাসেমী, মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাস, বাংলাদেশ জাতীয় দল সৈয়দ এহসানুল হুদা, পিপলস পার্টি অব বাংলাদেশের, রিটা রহমান, মাইনরিটি জনতা পার্টির সুকৃতি কুমার মন্ডল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
তার আগে বিকাল ৫ টায় বিএনপির জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে অংশ নিবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে এজন্য নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবি জানান তিনি। ড. কামাল হোসেন বলেন,নির্বাচনে যাচ্ছি নীতিগত ভাবে। এজন্য নির্বাচনের তফসিল পেছানো প্রয়োজন। তবে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো আভাস পেলে আমরা সেখানে যাবো না। তখন নির্বাচন কমিশনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন কিনা এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে মন্তব্য করবো না। ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবির মধ্যেই নিরপেক্ষতার কথা রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে সংলাপে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page