• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭ অপরাহ্ন

বিএনপির কথামতো প্রশাসনে রদবদল নয়, ইসিকে ১৪ দল

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮

বিএনপির পক্ষ থেকে ৯২ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে কাল্পনিক ও বাস্তবতা বিবর্জিত বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। ক্ষমতাসীন এ জোটের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিএনপির এমন কর্মকাণ্ড প্রশাসনকে মানসিকভাবে কোণঠাসা করে নিজেদের সুপ্ত এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপকৌশল মাত্র। বিএনপির দাবি অনুযায়ী রদবদল হলে শক্তিশালী প্রশাসনিক কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়বে। যার মধ্য দিয়ে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নিজেদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। বিএনপির কথামতো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন আছে বলে ১৪ দল মনে করে না।

শুক্রবার বিকালে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে লিখিতভাবে এ দাবি জানায়। প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি-জেপি মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, জাসদ নেতা নাদের চৌধুরী প্রমুখ। ১৪ দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।

পরে সাংবাদিকদের দিলীপ বড়ুয়া বলেন, এক ঢিলে দুই পাখি শিকারের চেষ্টা করছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আবার প্রতিদিন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মনগড়া ও বানোয়াট অভিযোগ করে সংশ্লিষ্টদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারে।

তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বক্তব্য রাখছে, অথচ ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন একজন আইনজ্ঞ হয়েও এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না। তার এমন আচরণ দ্বিচারিতা। বিএনপি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। অন্যদিকে তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। বিএনপির হিডেন এজেন্ডা কি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ইসি ও প্রশাসনকে অস্থিতিশীল করতে চায়। একই সঙ্গে নির্বাচনী পরিবেশও অস্থিতিশীল করছে। এরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে আবার নির্বাচন বানচালেরও ষড়যন্ত্র করছে।

প্রশাসনে রদবদল সম্পর্কে দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া যেন কাউকে বদলি না করা হয় সেজন্য ইসিকে বলা হয়েছে। নির্বাচনকে নিজেদের পক্ষে নেওয়ার জন্য মিডিয়ার মাধ্যমে বিএনপি যুদ্ধ চালাচ্ছে বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন ১৪ দলের নেতারা।

আরো পড়ুন: এবার শেষ চান্স, শেষ পরীক্ষা: মওদুদ আহমদ

সিইসি বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ প্রশাসনের কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তার শাস্তির দাবিসহ গোটা প্রশাসনে রদবদলের দাবি ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই না। আসন্ন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও বানচালের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা গ্রহণের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে এধরণের বাস্তবতা বিবর্জিত দাবি উত্থাপন করা হচ্ছে।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ সংক্রান্ত ১৪ দলের অভিযোগে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামি দেশের সর্বোচ্চ আইন প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান মহান জাতীয় সংসদের সদস্য পদ প্রার্থীদের বাছাই করতে পারেন না। যা সংবিধানের প্রতি চরম অবমাননা ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় বিধি বিধান পরিপন্থী। বিএনপির এই কর্মকাণ্ডকে বেআইনি দাবি করে দলটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করা হয় ক্ষমতাসীন জোটের পক্ষ থেকে।

অপর এক অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিপ্রায়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অভিপ্রায়ে গণমাধ্যমে লাগাতার মিথ্যাচার ও হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় ঐকফ্রন্টের ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়ার আহ্বান মূলত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত করে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির ষড়যন্ত্র। এধরণের বক্তব্যদাতাদের সতর্ক করার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ১৪ দল।

আরো পড়ুন: ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছে বলেও সিইসির কাছে লিখিত অভিযোগ করে প্রতিনিধি দল। ওই সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও উচ্চ আদালতের রায়ের লঙ্ঘন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

১৪ দলের অভিযোগে আরও বলা হয়, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণের খবর দেশবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ও চরম ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান ১৪ দল নেতারা। লিখিত অভিযোগে সংখ্যালঘুদের নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিতের জন্য ইসির দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

এছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণের নামে দেশে-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষকরা যাতে পক্ষাবলম্বন করতে না পারে সে ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসাররা সভা করেছেন বলে বিএনপি যে অভিযোগ করা হয়েছে তা অস্বীকার করা হয়েছে ১৪ দলের পক্ষ থেকে। বিএনপির এ অভিযোগ বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page