• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

রাজশাহী-১ বিএনপি-জামায়াত টানাপড়েন

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৮

তানোর ‘রাজশাহী’ প্রতিনিধি॥
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) ভিআইপি এই সংসদীয় আসনে আগামী একাদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে টানাপড়েন  এবং ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে মিজান নির্ভর রাজনীতি ও বিএনপির পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগে বিএনপিতে অভ্যন্তরীন কোন্দল-মতবিরোধ চরমে উঠেছে। এতে বিএনপির কমিটি-উপ-কমিটি ইত্যাদি কয়েক ভাবে বিভক্ত হওয়ায় সাংগঠনিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ও হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কেউ কারো নেতৃত্ব মেনে নিতে পারছে না। বিএনপি-জামায়াত টানাপড়েন ও বিএনপির চরম দলীয়কোন্দলের কারণে এখানে আওয়ামী লীগের অনেকটা নিশ্চিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের টানাপড়েন ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল মতবিরোধ নিরসনে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ প্রায় দ্বিগুন ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবে এটা প্রায় নিশ্চিত। রাজশাহী-১ আসনে ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও তার স্ত্রী আভা হকের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও দাখিল করায় বিএনপি-জামায়াত জোটে টানাপড়েন ও দলীয়কোন্দলের সূত্রপাত হয়েছে।
জানা গেছে, রাজশাহী-১ আসনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ প্রতিকে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে প্রার্থী করা হলে তাদের বিজয়ের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। অথচ ব্যারিস্টার আমিনুল হক বিএনপিতে তার পরিবারের একচ্ছত্র আধিপত্যর অবসান ও নেতৃত্ব হারানোর ভয়ে তিনি ও তার স্ত্রীর  নামে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন যেটা তৃণমূল মেনে নিতে পারছে না। তৃণমূলের অভিমত, আইনি জটিলতা বা কোনো কারণে ব্যারিস্টার আমিনুল ভোট করতে ব্যর্থ হলে তার স্ত্রী ভোট করবেন আর এমনটি হলে বিএনপির পরাজয় নিশ্চিত। কারণ ব্যারিস্টার আমিনুল কোনো কারণে নির্বাচনে অযোগ্য হলে তার স্ত্রী আভা হককে দিয়ে কোনো ভাবেই এিনপি বিজয়ী হতে পারবেন না, আভা হককে এই জনপদের মানুষ কখানো চোখেই দেখেননি কাজেই এমন কাউকে এই জনপদের মানুষ এমপি নির্বাচিত করবে না। তাহলে একাধিক প্রার্থী থাকার পরেও কেনো ব্যারিস্টার ও তার স্ত্রী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন অন্যরা করলে ক্ষতি কি বা ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতিকে জামায়াতের প্রার্থী দেয়া সম্ভব ছিল সেটিও করা হলো না কেনো ইত্যাদি হাজারো প্রশ্নের মূখে বিএনপির তৃণমূল বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। আবার কেউ বলছে, ব্যারিস্টার আমিনুল হক বিজয়ী হতে নয় বিএনপিতে তার পরিবারের একচ্ছত্র অধিপত্য ও নেতৃত্ব বজায় রাখতেই তারা স্বামী-স্ত্রী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
এদিকে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং প্রবসী বিএনপি নেতা অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করে যেকোনো মূল্য নির্বাচনে প্রতিদন্দিতা করার ঘোষণা দিয়ে ব্যাপক প্র¯ত্ততি গ্রহণ করেছেন। আর এসব সব কিছুই হয়েছে শুধুমাত্র ব্যারিস্টার আমিনুল হক পরিবারের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে রাজশাহী-১ আসনের তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায় বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের কমিটি গঠনে ব্যারিস্টার আমিনুলের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলে বিএনপির একাংশের নেতাবর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। অথচ বিএনপি-জামায়াত অধ্যূাষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত এখানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের ব্যাপক জনসমর্থনও রয়েছে তার পরেও জামায়াতের প্রার্থীকে ছাড় না দেয়ায় জামায়াত স্বতন্ত্র ভাবে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাঠে নেমে পুরোদমে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। আবার ব্যারিস্টার আমিনুলের ইচ্ছায় তানোর বিএনপির কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট হয়ে উঠেছে। ফলে বিএনপির একটি বড় অংশের নেতাকর্মীরা বিএনপিতে ব্যারিস্টার আমিনুলের একচ্ছত্র আধিপত্যর অবসান ঘটাতে নিরবে জামায়াত ওপর ভর করবে । এছাড়াও দলের দূর্দীনে নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলে দীর্ঘদিন আতœগোগণে থাকায় ব্যারিস্টার আমিনুলের বিরুদ্ধে বিএনপির একাংশের আদর্শিক, প্রবীণ ও ত্যাগী নেতারা এখানো অনেকটা ক্ষুব্ধ রয়েছে এরা এখন প্রতিশোধ নিতে ব্যারিস্টারবিরোধী শিবিরে সমর্থন দিবে এটা প্রায় নিশ্চিত। ইতমধ্যে ব্যারিস্টার আমিনুল হক এবং তানোর উপজেলা বিএনপির সম্পাদক ও পৌর মেয়র মিজান ঠেকাও বিএনপিও বাঁচাত শ্লোগান দিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যারিস্টার আমিনুলের বিকল্প নেতৃত্ব দাবি করে রাজনীতির মাঠ গরম ও নির্বাচনী এলাকায় জম্পেশ প্রচার-প্রচারণা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলেও প্রচার রয়েছে। এমনকি তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করে প্রতিবাদ করেছেন বলেও আলোচনা রয়েছে।
এছাড়াও ব্যারিস্টার আমিনুল প্রার্থী হলে অধ্যাপক শাহাদাৎ হোসেন শাহীন কোনো ছাড় দিবেন না যে কোনো মূল্য নির্বাচন করবেন। রাজশাহী-১ ‘তানোর-গোদাগাড়ী’ সংসদীয় আসনে বিএনপির রাজনীতিতে স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বশংবদ তৈরী, কোন্দল সৃষ্টি ও অনুপ্রবেশকারীদের দলীয় পদপদবীসহ নানান সুযোগ সুবিধা দেয়া হলেও দলের প্রবীণ, ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে ব্যারিস্টার আমিনুল হকের বিরুদ্ধে। আর এসব অভিযোগ নিজ দলের তৃণমূলের নেতা ও কমী-সমর্থকদের বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেস্টা করা হলেও বিএনপি ও জামায়াতের দায়িত্বশীল নেতাদের কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page