• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০০ পূর্বাহ্ন

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় ঘোড়া গাড়ির ব্যাপক পরিচিতি

আল ইসলাম কায়েদ
আপডেটঃ : শনিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৯

রংপুর অফিস॥
রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চরাঞ্চলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় ঘোড়া গাড়ি ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। চরাঞ্চলে ঘোড়া গাড়ির ব্যবহারের ফলে র্র্কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকার সাধারন মানুষের।
গতকাল শরিবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন তিস্তা নদী বেষ্টিত ১৮টি চরাঞ্চলের গ্রাম চর নয়ারহাট,চর গাবুড়া, মাঠেরহাট, রহমতের,ছক্কুর বাজার,হরিরামপুর,কিশামত ছাওলা,দামুস্বর,কাশিম,রামশিং,ভুট্টার বাজার,আনন্দবাজার,কাশিয়াবাড়ি,বোল্ডারের মাথা,তাম্বুলপুর,পানিয়ালের ঘাট,রামগোপাল,গেয়ানগজ্ঞ, এসব এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থার একমাত্র বাহন হিসেবে স্থান করে নিয়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি।
বালু আর মরা তিস্তার শাখা নদীর রাস্তাসহ কাঁদা রাস্তায় যেখানে ভ্যান, রিক্সা, ট্রলী, ট্রাক যেতে পারে না সে সব রাস্তার জনপ্রিয় বাহন হিসেবে ঘোড়া গাড়ির কদর বেড়েছে। উপজেলার সিংহ ভাগ রবি শস্য, ধান, পাট, আলু, বাদাম, ভুট্টা, ডাল চরাঞ্চলেই বেশী উৎপাদিত হয়। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটে বাজারে নিয়ে যেতে না পারার কারনে কম দামে ফড়িয়া দালালদের কাছে বাধ্য হয়েই বিক্রয় করতে হতো। বর্তমানে ঘোড়ার গাড়ি চালু হওয়ায় কৃষক এখন তার উৎপাদিত ফসল হাটে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পাচ্ছে। পীরগাছার বিভিন্ন চরাঞ্চলে প্রায় ৪ শতাধিক ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের চর গাবুড়া গ্রামের ঘোড়াগাড়ি চালক রবিউল ইসলাম এর সাখে কথা হলে  তিনি জানান, এক সময় তার সংসার চলতো না, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হতো পরিবার পরিজন নিয়ে। বাড়িতে তার স্ত্রীর পরামর্শে একটি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে রংপুর জেলার লালবাগ হাট থেকে  ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়া কিনে এনে এবং সাড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ করে গাড়ি তৈরী করেন। শুরু হয় তার পথ চলা। এর পর থেকে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি। ইতোমধ্যে সে ঋন পরিশোধ করেছে, ২০ শতক জমি ৮০ হাজার টাকা দিয়ে বন্ধক নিয়েছে। বর্তমানে তার প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ টাকা আয় হয়। ঘোড়ার পিছনে তার এক থেকে দেড়শ টাকা খাদ্য বাবদ ব্যয় হয়। ঘোড়া গাড়ির চাকা তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে সে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে। ঘোড়া গাড়ির ব্যাপারে ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ মো: আব্দুল হাকিম, তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রওশন জামি রবু সরদার,জানান ঘোড়া গাড়ির ফলে পরিবহনের সুবিধাসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আগে এ উপজেলায় ঘোড়গাড়ীা দেখা যেতনা, এখন প্রায় গ্রামে ঘোড়া গাড়ি রয়েছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আম্বার আলী তালুকদার জানান, গোড়ার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশী, তাই এর তেমন কোন রোগ হয় না। এই বাহনটি পরিবেশ বান্ধব। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান জানান, গেঘাড়া গাড়ির ফলে কৃষক তার উৎপদিত পন্য বাজারে নিয়ে গিয়ে ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় করতে পাচ্ছে।

Share Button


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page