• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

কে হবেন পরবর্তী হিজবুল্লাহ প্রধান : সাফিদ্দিন না কাসেম?

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
হাশেম সাফিদ্দিন ও নাইম কাসেম - ছবি : সংগৃহীত

লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি-জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার ফলে আন্দোলনটিতে কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলি নির্মম হত্যাযজ্ঞের ফলে গ্রুপটির নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল।

কিন্তু শুক্রবার রাতে নাসরুল্লাহর ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হওয়াটা কেবল একটি পদে থাকা ব্যক্তির মৃত্যু ছিল না। তিনি লেবাননের শিয়া এই আন্দোলন এবং বৃহত্তর অঞ্চলে তাদের সমর্থকদের ভরসার জায়গা ছিলেন।

নাসরুল্লাহ ১৯৯২ সালে হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি-জেনারেল হয়েছিলেন। ওই সময় তার বয়স ছিল ৩০-এর কোঠায়। তিনি গ্রুপটির অস্তিত্বের বেশিভাগ সময় নেতৃত্বে ছিলেন। ফলে তার মতো একজনকে পাওয়া তাদের জন্য খুবই কঠিন হবে। আবার ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং দক্ষিণ লেবাননে যেকোনো মুহূর্তে ইসরাইলের স্থল হামলা শুরু হতে পারে। এতে করে নতুন নেতা নির্বাচন করা এবং তার দলটি পরিচালনা করা খুবই কঠিন হবে।

তবে নতুন নেতা নির্বাচন করতেই হবে। এই মুহূর্তে নাসরুল্লাহর উত্তরসূরী হিসেবে দুজনের নাম আলোচিত হচ্ছে। তারা হলেন হাশেম সাফিদ্দিন ও নাইম কাসেম। তাদের সম্পর্কে কিছু তথ্য এখানে দেয়া হলো।

হাশেম সাফিদ্দিন
তিনি হলেন হিজবুল্লাহর নির্বাহী পরিষদের প্রধান এবং নাসরুল্লাহর কাজিন। তারই পরবর্তী সেক্রেটারি-জেনারেল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

টায়ারের কাছে দির কানুন আন-নহর গ্রামে ১৯৬৪ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ইরাকের নাজাফ ও ইরানের কোমের শিয়া ধর্মীয় প্রধান দুটি কেন্দ্রে নাসরুল্লাহর সাথেই সাফিদ্দিন ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। উভয়েই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে তাতে যোগ দিয়েছেন।

সাফিদ্দিন যে শিয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, তা থেকে অনেক প্রখ্যাত ধর্মীয় বিশেষজ্ঞ এবং লেবাননের পার্লামেন্ট সদস্য আত্মপ্রকাশ করেছেন। তার ভাই আবদুল্লাহ ইরানে হিজবুল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করেন। ইরানের সাথে সাফিদ্দিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তার ছেলে রেধা ইরানি জেনারেল কাশেম সোলাইমানির (২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় নিহত) মেয়েকে বিয়ে করেছেন।

নির্বাহী পরিষদের শীর্ষস্থানীয় ভূমিকার পাশাপাশি সাফিদ্দিন গ্রুপটির শূরা কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তিনি এর জিহাদি কাউন্সিলেরও প্রধান। এই গুরুত্ব তাকে হিজবুল্লাহর বিদেশী শত্রুদের নজরে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব তাকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করেছে, তার সম্পদ জব্দ করেছে।

নাইম কাশেম
৭১ বছর বয়স্ক নাইম কাশেম হলেন হিজবুল্লাহর ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল। তাকে প্রায়ই আন্দোলনটির ‌’২ নম্বর ব্যক্তি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

তিনি দক্ষিণ লেবাননের নাবাতি এলাকার কফর কিলায় জন্মগ্রহণ করেন। গত অক্টোবর থেকে এই এলাকায় অনেক ইসরাইলি হামলা হয়েছে।

শিয়া রাজনৈতিক কার্যক্রমে কাশেমের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭০-এর দশকে তিনি ইমাম মুসা আল-সদরের মুভমেন্ট অব ডিসপোসেসড-এ যোগ দিয়েছিলেন। পরে গ্রুপটি আমল মুভমেন্টে রূপ নেয়। তিনি ১৯৮০-এর দশকে আমল ত্যাগ করে হিজবুল্লাহ গঠনে সহায়তা করেন।

কাশেমের অন্যতম ধর্মীয় গুরু হলেন ব্যাপকভাবে শ্রদ্ধেয় আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ হোসাইন ফাদলাল্লাহ। আর কাশেম নিজে বৈরুতে কয়েক দশক ধরে ধর্মীয় শিক্ষাদান করেছেন।

তবে হিজবুল্লাহর মতো গোপন প্রকৃতির সংগঠনে তার সব ভূমিকা প্রকাশ্য নয়। তিনি হিজবুল্লাহর শিক্ষা নেটওয়ার্ক তদারকিও করতেন। তিনি গ্রুপটির পার্লামেন্টারি কার্যক্রমও তদারকি করতেন।

কাশেম ১৯৯১ সালে গ্রুপটির ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল নির্বাচিত হন। ওই সময় সেক্রেটারি-জেনারেল ছিলেন আব্বাস আল-মুসাবি। ইসরাইলি বাহিনী তাকে হত্যা করেছিল।

কাশেমও শূরা কাউন্সিলের সদস্য। তার বিখ্যাত একটি গ্রন্থ হচ্ছে হিজবুল্লাহ, দি স্টোরি ফ্রম উইদিন। ২০০৫ সালে লেখা বইটি কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।

সূত্র : আল জাজিরা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ