নেত্রকোনার কলমাকান্দার দক্ষিণ মুন্সিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজার সামনে বাঁশের বেড়া দিয়ে পুরো মাঠ দখলে নিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দা ঝুমা আক্তার, ভাই সোহরাব উদ্দিন ও তার বোনেরা ওই স্কুলের মাঠ দখলে নিয়ে বেড়া দিয়েছেন। ফলে শিক্ষক -শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বের হতে পারছেন না। বন্ধ খেলাধুলাও।
মাঠের জায়গাটি নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও তা অমান্য করে দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ফলে স্কুলের মাঠ দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।
মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ব্যানারে মাঠটি দখল মুক্ত করার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। পর শিক্ষার্থীরা খেলার মাঠ দখল মুক্ত চেয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় মুন্সিপুর গ্রামের জিএম তাজুল ইসলাম তালুকদার মুন্সিপুর মৌজার সাবেক ১৪৩০ দাগের ৫০ শতক জায়গায় দক্ষিণ মুন্সিপুর প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম ছয়টি শ্রেণিতে ২০৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের খেলার মাঠটি দখল করে চারপাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছে কয়েকজন প্রভাবশালী। ফলে কোমলমতি শিশুরা খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মাঠটি বিদ্যালয়ের দখলে ছিল। ২৬ সেপ্টেম্বর খেলার মাঠটি দখল করে ঝুমা আক্তার তার লোকজন। বর্তমানে মাঠটি উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করি। এই মাঠ দখলমুক্ত করার জন্য যতটুকু করা যায় সব চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে চার দিকে বেড়া দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সোহরাব উদ্দিন বলেন, যে জায়গাটিকে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বলা হচ্ছে, সেটি আমাদের পৈতৃক জায়গা। এটি নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালত মুন্সিপুর মৌজার ৩৭৩ খতিয়ানে, সাবেক ১৪৩০ দাগে ২৮ শতক জমি স্থিতাবস্থা রাখার জন্য উভয় পক্ষকে নির্দেশ দেন। আদালত অমান্য করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তাদের জায়গা এই জায়গায় যা ইচ্ছে তারা তাই করবেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আজিজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি আদালতে শরণাপন্ন হন ঝুমা আক্তার ও তার পরিবারের লোকজন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য নিদের্শ প্রদান করেন আদালত। কিন্তু এরপর থেকে সেই নির্দেশ অমান্য করে বিদ্যালয়ের মাঠ বেদখল করে কিছু গাছের চারা লাগিয়ে চারিদিকে বেড়া দেন ঝুমা ও তার লোকজন।
এবিষয়ে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা এসিল্যান্ড মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে অভিযোগটি শুনেছি। সরেজমিন পরিদর্শন করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।