ভারতবিরোধী ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান তুলে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন চীনপন্থি হিসেবে পরিচিত মোহাম্মেদ মুইজ্জু। তবে এবার ৫ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে গিয়ে সুর বদলে ফেলেছেন তিনি।
মুইজ্জুর ক্ষমতাগ্রহণের মধ্য দিয়ে মালদ্বীপের রাজনীতিতে চীনের প্রভাব বাড়ার ধারণা নয়াদিল্লির। তবে ভারতকে আশ্বস্ত করে মুইজ্জু বলেছেন, চীনের স্বার্থের জন্য ভারতের নিরাপত্তায় কোনো ত্রুটি হয় এমন কিছু করবে না তার সরকার।
রোববার সকালে ভারতে এসে পররাষ্টমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দেখা করেন মুইজ্জু। আজ সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে রাজঘাটেও যান গান্ধীজির সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করতে। এছাড়া আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও তার একান্ত বৈঠকের কথা। তার আগেই নয়াদিল্লির প্রতি বন্ধুত্ব ও সুসম্পর্কের বার্তা দিলেন মুইজ্জু।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে মুইজ্জু বলেন, ‘মালদ্বীপ এমন কিছু কখনও করবে না যাতে ভারতের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। মালদ্বীপ-ভারতের সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মান ও আগ্রহের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। মালদ্বীপের বাণিজ্য ও উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার ভারত। প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে’।
ভারতবিরোধী প্রচারণা ও বিদ্বেষ বাড়তে থাকায় মালদ্বীপ ভ্রমণ কমিয়ে দেয় ভারতের পর্যটকেরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে অশোভন মন্তব্যের জেরে তিন উপমন্ত্রীকে বহিষ্কার করেও চাপ সামলাতে পারছে না মুইজ্জু সরকার। ১ হাজার ১৯২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপের অর্থনীতির এক-তৃতীয়াংশ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। ভারতীয়দের বয়কটের কারণে দেশটির অর্থনীতিতে ধস নামার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
তবে উত্তেজনা মিটিয়ে ভারতীয়দের মালদ্বীপ ভ্রমণে স্বাগত জানিয়েছেন মুইজ্জু।
এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু বলেন, ‘প্রতিবেশী ও বন্ধুদের প্রতি সম্মান জানানো আমাদের ডিএনএ-তে মিশে আছে। ভারতীয়রা আমাদের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখে। ভারতীয় পর্যটকদের আমাদের দেশে স্বাগত জানাচ্ছি।’
গত বছরের শেষ দিকে মুইজ্জু প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি এই প্রথম আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত গেলেন।
ধারণা করা হচ্ছে ভারত সফরকালে দিল্লির কাছে ‘বেল আউট’ চাইবেন মুইজ্জু। কারণ, বর্তমানে দ্বীপদেশটি অর্থনৈতিক সংকটে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ঋণখেলাপি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে চাপ বাড়ছে মুইজ্জু সরকারের উপর। এক্ষেত্রে এখন ভারত ‘বেল আউট’ দিলে তা মালদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে শক্তিশালী করবে।