সাতক্ষীরার শ্যামনগরের জমিদার বাড়ি পূজামণ্ডপ ও স্বর্ণের মুকুট চুরি হওয়া যশোরেশ্বরী কালী মন্দির পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে তিনি নকিপুর জমিদার বাড়ি শারদীয় দুর্গাপূজা মণ্ডপ পরিদর্শন ও মতবিনিময় শেষে যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে পৌঁছান।
তিনি মন্দিরের চুরি হওয়া স্বর্ণের মুকুটের খোঁজ খবর নিয়ে বলেন, ‘মন্দিরের চুরির ঘটনা দুঃখজনক। আমরা খবর শোনা মাত্রই ঢাকা থেকে প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছি চুরি হওয়া কালীর মুকুট যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরিয়ে আনা হয়। জড়িতদের খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে, মন্দির পরিদর্শন শেষে তিনি মুন্সীগঞ্জে অবস্থিত আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম হয়ে সুন্দরবন ভ্রমণে কলাগাছিয়া যান। তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহের নেতৃত্বে ছাত্রদের পক্ষ থেকে বিশেষ ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
যশোরেশ্বরী কালী মন্দিরের জায়গা ও মন্দির কমিটির জেরে পরবর্তীতে মন্দির কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
হাতাহাতির বিষয়ে মহারাজা প্রতাপাদিত্য স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস বলেন, ‘নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতার কারণে মুকুট চুরির ঘটনা ঘটেছে। এত গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ন্যূনতম দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় ও তার লোকজন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর চড়াও হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষে জ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা মহোদয় মন্দির পরিদর্শন করে বেরিয়ে যাওয়ার পর মন্দির কর্তৃপক্ষ ও সনাতন ধর্মের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে একটু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এ সময় জামায়াতের সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব দাশ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল রিফাত, শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফকির তাইজুল ইসলাম, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সামিউল আজম মনির, সেক্রেটারি এস এম মোস্তফা কামাল, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি চেয়ারম্যান জি এম মাছুদুল আলম, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক পরিমাল কুমার মন্ডল, সহ-সভাপতি কৃষ্ণানন্দ মুখার্জী, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট কৃষ্ণ পদ মন্ডল, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের শ্যামনগর উপজেলা শাখার সভাপতি বিষ্ণুপদ মন্ডল, সেক্রেটারি কিরণ শংকর চ্যাটার্জী, উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ মন্দির কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।