একশ ব্রোকারেজ হাউজ বিনিয়োগকারীদেরকে মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ দিচ্ছে না। গ্রাহকের টাকা নয়ছয় করার সুযোগ পেতে তথ্য গোপন করার উদ্দেশ্যেই তারা এ সুযোগ দিচ্ছে না বলে মনে করছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, যেসব বিনিয়োগকারী দীর্ঘদিন ধরে একাউন্টে শেয়ার রেখে দেন, তাদেরকে না জানিয়ে কিছু ব্রোকার আইন ভঙ্গ করে তাদের শেয়ার লেনদেন করেন। গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবের টাকাও নয়ছয় করে কিছু ব্রোকারেজ হাউজ। মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হলে শেয়ার কেনাবেচা এবং টাকা উত্তোলনের তথ্য গ্রাহকের মোবাইলে চলে আসে। তাই ব্রোকারেজ হাউজগুলো মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দিতে চায় না।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ২৩৪টি সক্রিয় ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে। এরমধ্যে ১০০ ব্রোকারেজ হাউজের বিনিয়োগকারীরা মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ পাচ্ছেন না। এ হাউজগুলো একজন করে বিনিয়োগকারীকে মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দিয়েছে। এটা শুধু মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ রয়েছে, তা বলার জন্যই করা হয়েছে। বিএসইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলো বিভিন্ন সময়ে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে নয়ছয় করে। এজন্য বিএসইসির পক্ষ থেকে কিছু দিন পর পরই জরিমানা করা হয়। এরপরও এ প্রবণতা বন্ধ হয়নি। বিএসইসির পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে নজরদারি রয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা সচেতন হলে নয়ছয়ের সুযোগ অনেকাংশে কমে যেতে পারে। কারণ যে হাউজগুলো মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দেয় না, তাদের হাউজে লেনদেন না করে যারা সুযোগ দেয় তাদের হাউজে চলে গেলে এ প্রবণতা কমতে পারে। এতে করে হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদেরকে ধরে রাখতেই মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দিতে বাধ্য হবে।
এদিকে মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ না পাওয়ায় এসব হাউজের বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একই হাউজে বিনিয়োগ করায় এখান থেকে অন্য হাউজে যাচ্ছেন না। অথচ মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ থাকলে শেয়ার কেনাবেচায় সুবিধা, তুলনামূলক লাভজনকও। বিনিয়োগকারীরা চান, এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হোক, যেন সব ব্রোকারেজ হাউজ মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দেয়। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ থাকলে নিজেদের ইচ্ছে মতো বিভিন্ন রেটে শেয়ার পেতে অর্ডার বসিয়ে রাখা যায়। আর মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ না থাকলে হাউজে ফোন করে অল্প শেয়ার বা বিভিন্ন রেটে শেয়ার কেনার অর্ডার বসাতে কিছুটা অস্বস্তি বোধ হয়। তাই সব হাউজেই মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ থাকা দরকার।
ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, মোবাইলে লেনদেনের ক্ষেত্রে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। এজন্য কেউ কেউ মোবাইল লেনদেনের দিকে যাচ্ছেন না। তবে শেয়ার বিনিয়োগকারীরা বলছেন, যেখানে বেশিরভাগ ব্রোকারেজ হাউজ মোবাইলে লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে সেখানে ১০০ ব্রোকারেজ হাউজ ঝুঁকির অজুজাত দেখানো সমীচীন নয়।