বিএনপি নেতা আকতারুল আলম মাস্টারের বোন ফারজানা আক্তারকে তালাক দেওয়ায় ৮ মামলার আসামি হয়েছেন রাশেদুল হাসান। একের পর এক মামলায় রাশেদুলের জীবন এখন বিপর্যস্ত।
জানা যায়, ফারজানা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় স্থানীয় রাশেদুল হাসানের। এই দম্পতির দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তবে বনিবনা না হওয়ায় এক সময় তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। আক্তার মাস্টারের বোনকে তালাক দেওয়ার পরই রাশেদুলের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। একের পর এক মামলায় রাশেদুলের জীবন এখন বিপর্যস্ত। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের আগে অন্তত ৫টি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় অব্যাহতি পেয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নতুন করে আবার শুরু হয়েছে হয়রানি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া অন্তত দুটি হত্যা মামলাসহ ৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে রাশেদুলকে। একের পর এক মামলায় রাশেদুল এখন এলাকাছাড়া। আর এই সুযোগে রাশেদুলের ৬ তলা বাড়ি, বাড়ির পাশের ৭০ শতাংশ কৃষিজমিসহ সব জমিজমা সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন বিএনপি নেতা আক্তার মাস্টার ও তার লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আক্তার মাস্টারের বোন ফারজানা স্থানীয় টেংরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তবে রাশেদুলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হলে ফারজানা দীর্ঘদিন স্কুলে অনুপস্থিত ছিলেন। তার অনুপস্থিত থাকায় তখন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক সেটি শিক্ষা অফিসকে জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। এরপর ফারজানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর জের ধরে ৫ আগস্টের পরে প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধেও দেওয়া হয়েছে হত্যা মামলা।
জানতে চাইলে আত্মগোপনে থাকা রাশেদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন, স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে ৫টি হয়রানিমূলক মামলা করেছে তারা। সব মামলায়ই আমি খালাস পেয়ছি। ৫ আগস্টের পরে নতুন করে আরও দুটি হত্যা মামলাসহ ৩টি মামলায় আসামি করা হয়েছে আমাকে। ওইসব মামলার কারণে আমি আত্মগোপনে আছি।
তিনি বলেন, আর ওইদিকে আকতার মাস্টারের লোকজন আমার ৬ তলা বাড়ি, কৃষিজমিসহ সব সম্পত্তি দখল করে নিয়ে গেছে। আমার মা আমার বাড়িতে থাকতে পারছেন না। আমার দুটি মেয়ে, তাদেরও আমার কাছ থেকে নিয়ে গেছে। তাদের এক ভাই পুলিশে চাকরি করে, সে এখন ঢাকার একটি থানার ওসি। তার প্রভাবের কারণে আমরা পুলিশি কোনো সহায়তাও পাই না।
আকতার মাস্টারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রীপুর থানার ওসি মো. জয়নুল আবেদীন বলেন, এসব অভিযোগ সঠিক নয়। আকতার বা তার পরিবারের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আর সব মামলার বাদীই পাবলিক। তাদের আমি চিনিও না। আমি আসার পরে মাত্র দুটি মামলা হয়েছে। বেশিরভাগ মামলা কোর্টে হয়েছে। যারা বাদী তারাই আসামি করেছে। আমি এসব ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। আকতার মাস্টার এলাকার বিএনপি নেতা হিসেবে তাকে আমি চিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আকতার মাস্টার বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। আমি বা আমার কোনো লোকজন এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।
উল্লেখ্য, আকতারুল আলম মাস্টার গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।