বসন্তের আগমনী বার্তা চারদিকে। এখন প্রকৃতিতে বিরাজ করছে চঞ্চল সমীরণের উচ্ছ্বাসের আবহ। ফুলে ফুলে উড়ছে রঙিন প্রজাপতি। প্রকৃতির মতো তরুণ-তরুণীদের মনেও ছড়িয়ে পড়ে বসন্তের রঙের আভা। পোশাকে বসন্তের ছোঁয়া নিয়ে লিখেছেন তাসনিয়া লস্কর
কয়েকদিন পরেই বাঙালির প্রিয় বসন্তবরণ উত্সব। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো সময়ের সঙ্গে মিল রেখে তারা তৈরি করেছে নানা রঙের বসন্তের পোশাক। ফাল্গুনের পোশাকের ফ্যাশনে উজ্জ্বল রঙকে প্রাধান্য দিয়েছে। তাদের আয়োজনে রয়েছে বাহারি রঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রিপিস, টি-শার্ট, শার্ট ইত্যাদি। এসব পোশাকে রয়েছে বসন্তের ছোঁয়া। পোশাকের মধ্যে বসন্ত এসে যেন নিজে স্পর্শ করেছে। তারই প্রকাশ এখানকার প্রতিটি পোশাকে। ফাল্গুনকে ঘিরে পোশাকগুলোতে কাজ করা হয়েছে নানা ব্লক, টাইডাই, স্প্রে, ব্লক, চুনরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট, কারচুপি ইত্যাদি। এখানকার পোশাকগুলো যেন ফাল্গুনের বার্তা নিয়ে আসে। বসন্তের আগমনের বার্তাকে স্বাগত জানাতে ফ্যাশন হাউসগুলো আয়োজন করেছে ফাল্গুনী পোশাকের মেলা। এখানে সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া ইত্যাদি পোশাকের মাধ্যমে বসন্তকে প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে তরুণ-তরুণীর রুচির কথা। আঁকা হয়েছে তাদের মনের ছবি। ফ্যাশন হাউস রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, পহেলা ফাল্গুনের জন্য বাঙালিরা মুখিয়ে থাকেন অন্যরকম ভালোলাগায় দিনটি উদযাপনের প্রতীক্ষায়। আর এমন একটি দিনে প্রিয় মানুষের সঙ্গ দেয় অনাবিল আনন্দ, অশেষ সুখময়তা। এই উদযাপন নতুন পোশাক ছাড়াও যে অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এজন্য আমাদের আউটলেটগুলো সাজানো হয়েছে পহেলা ফাল্গুনের বিশেষ সংগ্রহে। বাসন্তী, গোল্ডেন, সবুজ ও নীল রঙে উজ্জ্বল হয়েছে প্রতিটি ফাল্গুনের পোশাক। মূলত ট্র্যাডিশনাল পোশাকই থাকছে এই কালেকশনে। মেয়েদের কালেকশনে আছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ, টপস, আনস্টিচ, সিঙ্গেল ওড়না, ব্লাউজ। জমিন অলঙ্করণে ব্যবহূত হয়েছে ব্লক প্রিন্ট, স্ক্রিন প্রিন্ট, হাতের কাজ, প্যাচওয়ার্ক। কেবল মেয়েদের নয়, ছেলেদের কালেকশনও সমান আকর্ষক। পাঞ্জাবি, পায়জাম, ফুলহাতা ও হাফহাতা শাট, টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট। সেইসঙ্গে শিশুদের জন্যও ফাল্গুনের পোশাক রয়েছে। তাদের জন্য ফ্রক, লং স্কার্ট-টপস, পাঞ্জাবি, ধুতি, ফুলহাতা ও হাফহাতা শাট, টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট পাওয়া যাবে আউটলেটগুলোতে।’ ফাগুনের এই দিনে বাসন্তী রঙের শাড়ি, খোঁপায় গাঁদা ফুলের মালা, হাতভর্তি চুড়ি, কপালে লাল টিপ। এতেই ফুটে ওঠে বাঙালি নারীর ফাগুনের প্রকৃত সাজ। প্রকৃতিতে এখন রঙের এমন ছড়াছড়ি, তাই সাজপোশাকে চাই একটু ভিন্নতা। শাড়িটা একরঙা, পাড়ে বর্ণিলতা। শাড়িটা যেহেতু এক রঙের, তাই ব্লাউজটা যেন বেশি বাহারি হয়। যেমন—হালকা হলুদ জমিন ও কমলা পাড়ের শাড়ির সঙ্গে লাল ব্লাউজ মানানসই। কমলা রঙের ব্লাউজ পরতে পারেন হালকা সবুজ জমিন হলুদ পাড়ের শাড়ির সঙ্গে। কম বয়সী মেয়েরা ব্লাউজের গলাটা বড় পরতে পারেন। স্লিভলেস ব্লাউজ পরলে শাড়িটা এক প্যাঁচে না পরাই ভালো। ফাগুনের প্রথম দিনে ঘটি হাতা, খাটো হাতার ব্লাউজের আবেদন তো আছেই। ব্লাউজে ছোট ঘণ্টা, কলকা ব্যবহার করা যেতে পারে। শাড়ির সঙ্গে কনট্রাস্ট করে ব্লাউজের রঙটা বেছে নিন। স্লিভলেস ব্লাউজ পরলে শুধু তাজা ফুলের বাজুবন্ধ পরতে পারেন। গলায় বা হাতে যেকোনো একটি গয়না পরতে পারেন। আর যদি মন চায় তো ফুলের গয়না বানিয়ে পরতে পারলে তো আপনি হয়ে উঠবেন অনন্যা। সেইসঙ্গে পরতে পারেন বসন্তের সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়া। আমাদের দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে পাবেন বাহারি ডিজাইনের বাসন্তী সালোয়ার-কামিজ ও ফতুয়া। আপনি যদি শাড়ি না পরে সালোয়ার-কামিজ বা ফতুয়া পরেন, তবে সঙ্গে সাজসজ্জার বিষয়টির দিকেও বিশেষ নজর দিতে হবে। আর ফাল্গুনের পোশাক কিনতে আপনি যেতে পারেন অঞ্জন’স, কে ক্র্যাফট, রঙ বাংলাদেশ, আড়ং, নিপুণ, বাংলার মেলা, মায়াসীর, নিত্য উপহার, দেশালসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসের আউটলেটে।
মডেল বৃষ্টি ও অন্তু
পোশাক রঙ বাংলাদেশ
ছবি ইউসুফ শাহরিয়ার