টাঙ্গাইল প্রতিনিধি॥
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কচুয়া পুকুরপাড় গ্রামে অষ্টম শ্রেণির ভাগনিকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে এক সৎমামা হাসানের(১৯) বিরুদ্ধে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী এখন ৩৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার দিকে মেয়েটির চাচা বাদি হয়ে ধর্ষণে সহযোগিতার জন্য সৎমা রোজিনা আক্তার ও ধর্ষক সৎমামা হাসানকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ধর্ষক হাসান সখীপুর উপজেলার কচুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে। ধর্ষণের শিকার কিশোরী উপজেলার কচুয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় বর্তমানে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রীটি।
ওই ছাত্রী, তার পরিবার ও মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, কিশোরীর বাবা চাকরিসূত্রে কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। সাত-আট বছর আগে মেয়েটিকে রেখে তার মা অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। এরপর চার বছর আগে সৎমা রোজিনাকে বিয়ে করেন তার বাবা। বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় সৎমা রোজিনা আক্তার বছর দু’য়েক ধরে তার ভাই হাসানকে বাড়িতে এনে রেখেছেন। হাসান একা ঘরে থাকলে স্বপ্নে তাকে ‘বোবায়’ ধরে এমন অজুহাতে রোজিনা ওই কিশোরীকে মামার ঘরেই থাকার ব্যবস্থা করেন।
ধর্ষিতা কিশোরী জানায়, এক রাতে ঘুমানোর পর সৎমামা হাসান তাকে ধর্ষণ করেন। সুযোগ বুঝে এভাবে মাঝে মধ্যেই মেয়েটিকে ধর্ষণ করে ওই সৎমামা। বিষয়টি তার সৎমাকে জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। উল্টো মেয়েটিকে কাউকে কিছু না জানাতে বলেন। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এলাকায়ও কানাঘুষা শুরু হলে কিশোরীকে সৎমা গৃহবন্দি করে রাখেন।
ধর্ষিত কিশোরী এখন ৮ মাসের (৩৩ সপ্তাহ) অন্তঃসত্ত্বা বলে ২২ ফেব্রুয়ারি আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় একটি ক্লিনিকের চিকিৎসক।
কিশোরীর চাচা অভিযোগ করেন, প্রায় চার মাস ধরে বিষয়টি জানাজানি হলেও হাসান ও তার বোন বিষয়টি পাত্তা দিচ্ছে না। সৎমা রোজিনা তার ছোট ভাই (অভিযুক্ত ধর্ষক) হাসানসহ মেয়েটিকে ফেলে রেখে বাবার বাড়ি চলে গেছেন। এদিকে মেয়ের চাচারা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন দাবি করে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত হাসান।
কিশোরীর পরিবারের লোকজনের দাবি, ওই মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইদ্রিছ শিকদারের মধ্যস্থতায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার মিমাসাংসার চেষ্টা করা হলেও কোন লাভ হয়নি। এ বিষয়ে কচুয়া ওয়াজেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইদ্রিছ শিকদার ও মাদ্রাসার সুপার ছাত্রীটি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় চার মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সখীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক ভূঁইয়া বলেন, শুক্রবার রাতে মেয়ে ও মেয়ের চাচা থানায় হাজির হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়ে কিশোরীটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।