শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করে ছাত্রলীগ।
গণহত্যার সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ‘গণহত্যা অস্বীকৃতি আইন’ প্রবর্তন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা এবং স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত-শিবিরকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ছাত্রলীগ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। গণহত্যার বিষয়টি বাংলাদেশ সংবিধানে আলাদা একটি অনুচ্ছেদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আমরা যখন দেশীয় আইনে এটি নিশ্চিত করতে পারবো, তখন আন্তর্জাতিক আইনে নিশ্চিত করা আমাদের জন্য সহজ হবে।’
তিনি বলেন, ‘৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বিষয়টি আরও বেশি মানুষের জন্য সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ণ হতো।’
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ২১ ফেব্রুয়ারিকে যেভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছি, মঙ্গল শোভাযাত্রার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে পেরেছি, একই সঙ্গে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হচ্ছি, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করে ছাড়বে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এ দেশে এমন একজন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন যিনি বলতেন ৩০ লাখ নয়, ৩ লাখ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। সেসময় যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা ও লাখো মানুষের রক্ত নিয়ে তামাশা করার ইতিহাস আমরা দেখেছি।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘আমাদের আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের সংবিধান হবে স্মার্ট সংবিধান। স্মার্ট সংবিধানে জাতীয় পতাকা ও রাষ্ট্রের মূলনীতিগুলোর উল্লেখ যেভাবে থাকবে, সেভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে সংঘটিত সেই বর্বরোচিত গণহত্যার বিষয়টিও সাংবিধানিকভাবে উল্লেখ থাকবে বলে আমরা বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে দাবি জানাই।’
ইনান আরও বলেন, ‘আজ স্বাধীনতার এত বছর পরেও আমাদের অত্যন্ত লজ্জার সঙ্গে দেখতে হয় এখনো কিছু কুলাঙ্গার, সেই পাকিস্তানি তাবেদার, দেশবিরোধী অপশক্তি আমাদের একাত্তরের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধকে গণ্ডগোল বলে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা এ কথা বলে তাদের জন্মের মধ্যেই গণ্ডগোল রয়েছে। যারা একাত্তরের এ হত্যাকাণ্ডকে অস্বীকৃতি জানায় বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই রাষ্ট্রীয়ভাবে আইন প্রণয়ন করতে হবে।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এ সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।