• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

রমজানে স্বাস্থ্য সচেতনতা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৩

রমজান একটি মাহাত্ম্যপূর্ণ মাসের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। এ মাস সামাজিক আচার-আচরণে, কার্যকলাপে, ব্যবসা-বাণিজ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে থাকে। এ মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রোজা, নামাজ, ছদকা, ফিতরা, জাকাত, দান-খয়রাতের মাধ্যমে আরও বেশি ইবাদত-বন্দেগিতে মনোনিবেশ করে থাকেন। হাটে-ঘাটে, বাজারে, অফিস-আদালত ও অন্যান্য জনবহুল স্থানে প্রকাশ্যে পানাহার বন্ধ রাখাসহ মানুষের আচরণগত অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। রমজান মাসে খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে মুসলমানরা অনেক বেশি উদার বা উদাসীন মনোভাবের পরিচয় দিয়ে থাকেন।

অনেকে মনে করেন রমজানে আমরা যত খুশি খাওয়া-দাওয়া করব, এতে দোষের কিছু নেই। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। কারণ, খাদ্য এমন একটি বিষয় যা সব সময় একইভাবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই রমজান মাসেও আপনি বেশি পরিমাণে খাদ্যগ্রহণ করলে মোটা বা স্থূলাকায় হবেন -এটাই স্বাভাবিক। বেশি করে চিনি-মিষ্টি খেলে আপনার ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হবে এবং ওজন বাড়বে। অতিরিক্ত তেল-চর্বি জাতীয় খাদ্য গ্রহণেও আপনার ওজন বাড়বে এবং রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে -এটাও অবধারিত। তাই রমজান মাসে সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে অত্যধিক চিনিযুক্ত খাবার ও অতিমাত্রায় তেল-চর্বি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

 

অবশ্যই অতি ভোজন থেকে বিরত থাকতে হবে। তা না হলে আপনি একমাসে যে পরিমাণ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বেন, তা সারাতে অনেক মাস লেগে যাবে। রমজানেও আমরা সুষম খাদ্য (ব্যালেন্স ডায়েট) গ্রহণ করতে ভুলব না। সুষম খাদ্য বলতে এমন এক ধরনের খাদ্যকে বোঝায় যাতে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান সঠিক মাত্রায় বিদ্যমান থাকবে, যেমন কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার ও পানি। রমজান মাসে ভাত, মাছ, সবজি, ফলমূল ইত্যাদি বাদ দিয়ে, যদি পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি, কাচ্চি, ভাজা-পোড়া খাবার, মিষ্টি, খিচুড়ি, ফিরনি, পায়েস ও মন্ডা-মিঠাই ইত্যাদি খাদ্যের প্রতি বেশি ঝুঁকে যাই, তবে শাক-সবজি, ফলমূল, ভাত-রুটি ও ফাইবার জাতীয় খাদ্য গ্রহণের মাত্রা কমে গিয়ে, সুষম খাদ্যগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়বে। তার মানে এই নয়, রমজানে আমরা ইফতারের মজাদার খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকব। তবে এসব মজাদার খাদ্য অবশ্যই স্বল্প মাত্রায় গ্রহণ করব এবং রাতের খাবার ও সাহরিতে প্রয়োজনীয় শাক-সবজি, ফলমূল, মাছ-ভাত অবশ্যই গ্রহণ করব।

 

দুধ-দধিও পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে। এ মাসে রোজা রাখার ফলে অনেকেই কাজ-কর্ম কমিয়ে, ঘুমের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলেন এবং অনেকেই নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলেন। এটা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। রোজার সময় প্রত্যেক ব্যক্তি তার কর্মতৎপরতা বজায় রেখে রোজা পালন করবেন। তবে হাঁটা ও ব্যায়ামের সময়সূচি পরিবর্তন করে নিতে পারেন। ছাদে বা একটু বড় বারান্দায় বিকালে হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম করবেন। তবে শরীর অত্যধিক ঘেমে, পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়, এমনটা থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন। বিকাল বেলায় হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়ামে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে আপনার খাদ্য গ্রহণের আগ্রহ অনেকাংশে নিবৃত হবে। হালকা ব্যায়াম ও মেডিটেশন এবং ইয়োগা করবেন। হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম করার সময়, যদি মাথা হালকা বোধ করা বা মাথা ঘোরার উপক্রম হয়, তবে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম বন্ধ করে দেবেন। তাই এসব বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ