• বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন

এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ২১ মে, ২০২৩

এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না’―এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তা ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাগপা। সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আব্দুস সালাম, জাগপার সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদত হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য খন্দকার আবিদুর রহমান, আ স ম মেজবাহউদ্দিন, অধ্যক্ষ হুমায়ূন কবির, যুগ্ম সম্পাদক ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, সাইফুল আলম, এনপিপির অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, যুব জাগপার সভাপতি আমির হোসেন আমু প্রমুখ।

শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কখনো আপস করেননি মরহুম প্রধান। তিনি সব সময় দেশ ও জাতির জন্য সোচ্চার ছিলেন। তিনি কোনো সাধারণ নেতা ছিলেন না। তিনি সত্যিকার অর্থেই ত্যাগী, দেশপ্রেমিক ও বিপ্লবী নেতা ছিলেন। তার পিতা ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান অ্যাসেম্বলির স্পিকার। তিনি নিজেও সারাজীবন পরাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। তার পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। তিনি নীতির প্রশ্নে কোনো আপস করেননি। তিনি ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা বা অর্থ লোভে গা ভাসিয়ে দেননি। তার রাজনীতির কোনো স্বার্থ ছিল না। তার কাছে দেশ ও দেশের মানুষ ছিল মুখ্য। আমরা তাকে রাজনীতিতে সম্মান করি। বেগম খালেদা জিয়া তাকে অনেক পছন্দ করতেন। আমরা তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা কাজে লাগাতে চেয়েছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা তাকে বেশি দিন পাইনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একদিকে দেশের মানুষ আর অন্যদিকে ক্ষমতায় জোর করে থাকা একটি শাসকশ্রেণি আজ মুখোমুখি। এই সরকার যখন আন্দোলন দেখে, তখন তা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। যে আওয়ামী লীগ বলেছিল, দেশ হবে সাম্যের, গণতন্ত্রের অথচ সেই আওয়ামী লীগ জোর করে অন্যায়ভাবে, একবার নয়, দুবার ভোট না করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। যেখানে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। ২০১৪ সালের নির্বাচন কেউ ভোট দেয়নি। যেখানে কেন্দ্রে কুত্তা শুয়ে ছিল। সে জন্য প্রয়াত শফিউল আলম প্রধান ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বলেছিলেন, এটা একটা কুত্তা মার্কা নির্বাচন। আর ১৮ সালের নির্বাচন তো রাতে হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের সকল ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় একই অবস্থা। নির্বাচন ব্যবস্থাকে একেবারেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সরকার নির্বাচন দেখাবে নির্বাচন কমিশন কথা বলবে একটা নির্বাচন হয়েছে দেখার চেষ্টা করবে কিন্তু নির্বাচনটা তারা তাদের মতো করে করবে। অত্যন্ত পরিষ্কার, স্পষ্ট, দৃঢ় উচ্চারণ এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এ সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তা ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে এতো মিডিয়া কেউ কি কিছু লিখতে পারে? না। সাংবাদিকরা সব সময় ভয়ে থাকে। সাগর রুনি হত্যার বিচার হয়নি এখনও। অনেক সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অনেক সাংবাদিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে জীবনের ভয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের কোনো সাংবাদিক নেতারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলেন না। কারণ চাকরি চলে যাবে। আরো নানা ভয়। এটা হবেই। কিন্তু সবাই মিলে যদি রুখে না, প্রতিবাদ না করে তাহলে দেশ কিন্তু রক্ষা হবে। মনে রাখতে হবে, এ আওয়ামী লীগ সেই আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েম করে মাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। আর সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, গায়েবি মামলার কথা বলতে বলতে আমরা হয়রান হয়ে গেছি, খুলনায় হামলা করে, শেষ পর্যন্ত আমাদের ১৩০০ নেতাকর্মী বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাহলে বোঝেন, এক মামলায় ১৩০০ আসামি হলে তাহলে কত আসামি করা হয়েছে? আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মী বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

ভালো মানুষ কখনো আওয়ামী লীগের থাকতে পারেন না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা কিন্তু আওয়ামী লীগে থাকতে পারেনি। আ স ম আব্দুর রব, ওবায়দুর রহমান, মাহমুদুর রহমান মান্না, আব্দুস সালাম আরও অনেক আওয়ামী লীগ করতেন, কিন্তু কেউ আর আওয়ামী লীগ থাকেননি। কারণ আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতির আখড়া তৈরি করে ছিল। মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ‘নিখিল বাংলা লুটপাট সমিতি’। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতিকে খুবলে খুবলে খাচ্ছে। তারা দেশের স্বাধীনতার চেতনা ধ্বংস করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ