ইউক্রেনে টানা প্রায় দেড় বছর ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। এই পরিস্থিতিতে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যেই মার্কিন সেই বোমা ইউক্রেনের হাতে এসেও পৌঁছেছে। -রয়টার্স
এই পরিস্থিতিতে এবার ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার কাছে ক্লাস্টার বোমার ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ রয়েছে এবং প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করা হবে। রোববার (১৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার কাছে ক্লাস্টার বোমার ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ রয়েছে এবং ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হলে মস্কোও পাল্টা সেগুলো ব্যবহারের অধিকার সংরক্ষণ করে বলে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেছেন, ‘অবশ্যই, যদি এটা (ক্লাস্টার বোমা) আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়, আমরাও পাল্টা পদক্ষেপে একই ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করি।’ প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই উদ্ধৃতি রোববার প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারে পুতিন আরও বলেছেন, রাশিয়ার কাছে ক্লাস্টার বোমার ‘পর্যাপ্ত মজুদ’ রয়েছে এবং প্রয়োজনে সেগুলো (ইউক্রেনে) ব্যবহার করা হবে।
রয়টার্স বলছে, ইউক্রেন ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্লাস্টার বোমা হাতে পেয়েছে। কুখ্যাত এই বোমার ব্যবহার ১০০টিরও বেশি দেশে নিষিদ্ধ। অবশ্য ইউক্রেন দাবি করেছে, এই বোমা তারা রাশিয়ায় ব্যবহার করবে না। কিয়েভের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অস্ত্র রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের ভূখণ্ড মুক্ত করতে সাহায্য করবে।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছিল, ১০০ টিরও বেশি দেশে ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ। ক্লাস্টার বোমা রকেট সদৃশ একটি কাঠামোর ভেতর থাকে। এ বোমা বিমান, কামান ও রকেট লঞ্চার থেকে ছোঁড়া যায়। ক্লাস্টার বোমা যখন ছোঁড়া হয় তখন এর ভেতর থাকা ছোট ছোট বোমা ছড়িয়ে যায় এবং এগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
আর এটি আঘাত হানার পর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করতে পারে। এছাড়া বিস্ফোরণে ব্যর্থ হওয়া বোমাগুলোও কয়েক দশক ধরে বিপদ জারি রাখে। মূলত বেসামরিক মানুষ হতাহত হওয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেনকে এ বোমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ক্লাস্টার বোমা সংক্রান্ত কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি রাশিয়া, ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ওই কনভেনশনে এই ধরনের অস্ত্র উৎপাদন, মজুদ, ব্যবহার এবং স্থানান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী স্পেন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও কানাডার মতো মার্কিন-মিত্র দেশগুলো ইউক্রেনকে এই ধরনের যুদ্ধাস্ত্র দেওয়ার বিষয়ে আগেই বিরোধিতা করেছিল। অবশ্য ক্লাস্টার বোমাবিরোধী চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র না থাকায় ইউক্রেনকে এই ধরনের বোমা দিতে উত্তর আমেরিকার এই দেশটির আইনি কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি।